অবিশ্বাস্য হলেও সত্য, এবছর নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্ত ৬ আমেরিকানই অভিবাসী। রিপাবলিকান পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রাথীসহ কংগ্রেসের রিপাবলিকান সদস্যরা যখন অভিবাসন-বিরোধী মন্তব্য কিংবা বক্তব্য দিচ্ছেন, নানা কারণে এখনও বৈধ হতে না পারা সোয়া কোটি অভিবাসীকে ঢালাওভাবে বহিষ্কারের পরিকল্পনা ঘোষণা করছেন এবং অভিবাসীদের কারণে আমেরিকানরা কাজ পাচ্ছেন না বলেও প্রচারণা চালাচ্ছেন, ঠিক সে সময়েই মেধাবি অভিবাসীর স্বীকৃতিতে ঝলসে উঠছে আমেরিকা। অর্থাৎ অভিবাসীরা মেধার সর্বোচ্চ বিনিয়োগ ঘটিয়ে আমেরিকার ইমেজ আরো উজ্জ্বল করছেন। বিশ্বে সবচেয়ে ক্ষমতাধর রাষ্ট্র হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানকে সুসংহত করতে অভিবাসীরাও নিরন্তরভাবে কাজ করছেন।
সর্বশেষ গত সোমবার ঘোষিত অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী অলিভার হার্ট এবং বেঙট হোলস্টর্ম-উভয়েই অভিবাসী। অলিভার হার্ট এসেছেন যুক্তরাজ্য থেকে এবং হোলস্টর্ম এসেছেন ফিনল্যান্ড থেকে। তারা দু’জনই উচ্চতর ডিগ্রিগ্রহণ শেষে পিএইচডি করতে যুক্তরাষ্ট্রে এসেছিলেন।
১৯৭৪ সালে প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটি থেকে গ্র্যাজুয়েশন করেছেন হার্ট এবং হোলস্টর্ম গ্র্যাজুয়েশন করেছেন ১৯৭৮ সালে স্ট্যানফোর্ড থেকে। অন্য অভিবাসীদের মতো তারাও আমেরিকায় স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্যে আমোরিকানকে বিয়ে করেন। উভয়েই সপরিবারে ম্যাসেচুসেটস অঙ্গরাজ্যে বাস করছেন।
এ বছর আরও ৪ আমেরিকান নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন। রসায়নে নোবেল জয়ী স্যার জে ফ্র্যাস্টার স্টোডার্ট যুক্তরাষ্ট্রে এসেছেন যুক্তরাজ্য থেকে। তিনি শিক্ষকতা করছেন নর্থওয়েস্টার্নে। পদার্থ বিজ্ঞানে পুরস্কারপ্রাপ্ত ডেভিড থাউলেস, মাইকেল কস্টারলিটজ এবং ডানকান হ্যাল্ডেন যুক্তরাষ্ট্রে এসেছেন যুক্তরাজ্য থেকে। তারা স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন আমেরিকায়। বৃটেনের শিক্ষা ব্যবস্থার সুফল হিসেবে এসব কৃতি অর্থনীতিবিদ, বিজ্ঞানী আর গবেষকরা গড়ে উঠলেও যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পরিবেশ তাদের আকৃষ্ট করতে সক্ষম হয়।
ন্যাশনাল ফাউন্ডেশন ফর আমেরিকান পলিসির কর্মকর্তা স্টুয়ার্ট এন্ডারসন খোঁজ-খবর রাখেন নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্তদের ব্যাপারে। ২০০০ সাল থেকে রসায়ন, মেডিসিন এবং পদার্থ বিজ্ঞানে নোবেল বিজয়ী ৭৮ আমেরিকানের ৩১ জন তথা ৪০ শতাংশ হলেন অভিবাসী। তারা যুক্তরাজ্য, জাপান, কানাডা, তুরস্ক, অস্ট্রিয়া, চীন, ইজরায়েল, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং জার্মানির মতো সমৃদ্ধশীল দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আসেন।
বিডি-প্রতিদিন/১৩ অক্টোবর, ২০১৬/মাহবুব