প্রায় ১০ বছর পর আমেরিকার নিউইয়র্ক সিটিতে ধর্মঘট করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার ইয়েমেনী অভিবাসীরা এ ধর্মঘট পালন করেন। ফলে দুপুর থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ইয়েমেনী-আমেরিকান নাগরিকদের মালিকানাধীন বহু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল।
মুসলিম অধ্যুষিত সাত দেশের নাগরিকদের ভিসা নিষিদ্ধের প্রতিবাদে এ ধর্মঘট পালন করা হয়।
প্রায় প্রতিটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনেই ধর্মঘটের প্রেক্ষাপট সম্বলিত পোস্টার দেখা যায়। কোনো কোনো পোস্টারে ট্রাম্পকে মোকাবেলায় ভিনদেশি প্রতিবেশীদের সমর্থন কামনা করা হয়।
গত অর্ধশত বছরের মধ্যে নিউইয়র্কে ধর্মঘটের এটি তৃতীয় ঘটনা। এর আগে ইয়েলো ট্যাক্সি ড্রাইভাররা ১৯৯৮ ও ২০০৭ সালে ধর্মঘট করেছিলেন। তবে এবারের ধর্মঘটের ব্যাপকতা ছিল অনেক বেশি।
মার্কিন সংবাদমাধ্যমগুলোতে ব্যাপক প্রচার পায় ইয়েমেনী-আমেরিকানদের এ কর্মসূচি।
নব্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যে সাতটি দেশের ৯০ দিনের জন্যে ভিসা নিষিদ্ধ করেছেন, ইয়েমেন তার অন্যতম।
ধর্মঘটে অংশগ্রহণকারীরা জড়ো হন ব্রুকলীন হলের সামনে। আমেরিকা এবং ইয়েমেনের জাতীয় পতাকা ছাড়াও অনেকের হাতে ছিল ট্রাম্পের জারিকৃত নির্বাহী আদেশের কঠোর সমালোচনামূলক বক্তব্যের পোস্টার-প্লেকার্ড। এ সময় সমস্বরে উচ্চারিত হয়, 'নো ব্যান নো ওয়াল-ইউএস ফর অ্যল', 'লেট দেম ইন' ইত্যাদি।
এ কর্মসূচিতে আমেরিকানদের উপস্থিতিও ছিল উল্লেখ করার মতো। অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা অনেক হলেও পুলিশ প্রহরায় অনুষ্ঠিত এ কর্মসূচিতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
অংশগ্রহণকারীরা বলেছেন, বৈধ ভিসা থাকা সত্ত্বেও অনেককে জন এফ কেনেডি বিমানবন্দরে ঘন্টার পর ঘন্টা আটকে রেখে মানসিক যন্ত্রণা দেয়া হচ্ছে। ভিসা থাকা সত্ত্বেও অনেকে ইয়েমেন থেকে ফ্লাইটেই উঠতে পারছেন না। এভাবে পরিবারের লোকজনকে ছিন্নভিন্ন করা হচ্ছে।
২ ফেব্রুয়ারি টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের হিউস্টন সিটিতেও বড় ধরনের বিক্ষোভ করেন নিষিদ্ধ ঘোষিত সাত মুসলিম রাষ্ট্রের অভিবাসী ছাড়াও মেক্সিকান এবং স্প্যানিসরা। কারণ, নির্বাহী আদেশে অবৈধভাবে বসবাসরত অভিবাসীদের ঢালাওভাবে গ্রেফতার ও বহিষ্কারের নির্দেশও দিয়েছেন ট্রাম্প।
ট্রাম্পের অভিবাসন এবং মুসলিম রাষ্ট্র সম্পর্কে প্রদত্ত নির্বাহী আদেশের বিরুদ্ধে ২ ফেব্রুয়ারি ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্যে মামলা করা হয়। এ নিয়ে পাঁচ রাজ্যে ফেডারেল কোর্টে মামলা হলো। আরও ১৬ অঙ্গরাজ্যের এটর্নী জেনারেলরা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।
বিডি প্রতিদিন/৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭/ফারজানা