বাংলাদেশ দূতাবাস, সিউল-এর উদ্যোগে যথাযোগ্য মর্যাদায় শুক্রবার আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস পালিত হয়েছে। দিবসটির প্রতিপাদ্য ছিল ‘মুজিববর্ষের আহ্বান, দক্ষ হয়ে বিদেশ যান’।
দিবস উপলক্ষে পাঁচটি ক্যাটাগরিতে ১৫ জন বাংলাদেশি ইপিএস কর্মীকে এবং সর্বোচ্চ সংখ্যক বাংলাদেশি ইপিএস কর্মী নিয়োগের জন্য ১১ জন কোরিয়ান নিয়োগ কর্তাকে সম্মাননা প্রদান করা হয়।
দক্ষিণ কোরিয়ায় করোনার ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণের কারণে সামাজিক দূরত্ব সংক্রান্ত নীতিমালা অনুসরণ করে সম্মাননা প্রাপ্তদের ক্রেস্ট ও সনদপত্র দূতাবাসের পক্ষ হতে ডাকযোগে প্রেরণ করা হয় এবং স্বাস্থ্যবিধি অনুযায়ী সীমিত পরিসরে দূতাবাস প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠানটির আয়োজন করা হয়।
২০১৯-২০ অর্থবছরে বৈধ উপায়ে সর্বোচ্চ রেমিটেন্স প্রেরণকারী পাঁচ জন ইপিএস কর্মী, একই কর্মস্থলে দীর্ঘদিন অবস্থানকারী তিন জন, কোরিয়ান সরকার কর্তৃক পুরস্কার প্রাপ্ত তিন জন, কোরিয়ান ভাষায় দক্ষতা অর্জনকারী পাঁচ জন এবং কর্মক্ষেত্রে ব্যস্ততার পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কোরিয়ায় বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রাখার জন্য দুই জনসহ মোট ১৫ বাংলাদেশি ইপিএস কর্মীকে এই সম্মাননা ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।
পবিত্র ধর্ম গ্রন্থসমূহ পাঠের মধ্য দিয়ে দিবসটির আনুষ্ঠানিক কর্মসূচির শুভসূচনা করা হয়। এরপর বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী এবং জাতিসংঘ মহাসচিবের প্রেরিত বাণীসমূহ পর্যায়ক্রমে পাঠ করে শোনানো হয়।
অনুষ্ঠানে সম্মাননা প্রাপ্ত ইপিএস কর্মীদের এবং নিয়োগ কর্তাদের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি ও তাদের কর্মকাণ্ডের উপর একটি বিশদ উপস্থাপনা প্রদান করেন দূতাবাসের প্রথম সচিব (শ্রম), মকিমা বেগম।
রাষ্ট্রদূত আবিদা ইসলাম তার সমাপনী বক্তব্যে আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস ২০২০ উপলক্ষে দক্ষিণ কোরিয়ায় অবস্থানরত সকল বাংলাদেশি ইপিএস কর্মীদের অভিনন্দন জানান। এছাড়াও বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে তাদের অবদানের কথা গুরুত্বের সাথে তুলে ধরেন তিনি।
তিনি দক্ষিণ কোরিয়ায় কর্মরত সকল বাংলাদেশি ইপিএস কর্মীদের কর্মনিষ্ঠা, আনুগত্য এবং দক্ষতার প্রশংসা করেন এবং কোভিড-১৯ মহামারী থেকে সর্বদা নিরাপদ থাকার জন্য সকল স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে পালন পূর্বক দৈনন্দিন জীবন-যাপন ও শিল্পকারখানায় কর্ম সম্পাদন করার অনুরোধ জানান।
তিনি আরো বলেন, মহামারীর এই সংকটজনক পরিস্থিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রাবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, বোয়েসেল এবং দূতাবাসের তৎপরতার কারণে বাংলাদেশে ছুটিতে ও রিলিজে অবস্থানরত ৫৬৬ জন ইপিএস কর্মীকে ইতোমধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। যেসব কর্মীদের রিলিজের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছিল দূতাবাসের হস্তক্ষেপের কারণে তাদের অনেকেরই রিলিজের মেয়াদ সংক্রান্ত জটিলতার অবসান ঘটানো সম্ভব হয়েছে এবং পুনরায় তারা নতুন কর্মস্থলে যোগ দিতে সমর্থ হয়েছে। এছাড়া ভিসা নিষেধাজ্ঞা শিথিলসহ রোস্টারভুক্ত কমিটেড ও রেগুলার ইপিএস কর্মীদের জন্য দক্ষিণ কোরিয়ার প্রবেশ দ্বার উন্মুক্ত করবার লক্ষ্যে দূতাবাস অব্যাহত প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
রাষ্ট্রদূত আরো বলেন, সরকারের নীতি অনুসরণ করে দূতাবাসও অভিবাসী কর্মীদের দক্ষতা উন্নয়নের উপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেছে। এ লক্ষ্যে দূরশিক্ষণের পাশাপাশি দক্ষিণ কোরিয়ার প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য ঢাকা চেম্বার অব কমার্সের সাথে যৌথ উদ্যোগে অনলাইন উদ্যোক্তা প্রশিক্ষণ কোর্সের আয়োজন করেছে, যা শীঘ্রই শুরু হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী মোটিফের ব্যবহারের উপর একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। অংশগ্রহণকারীদের আপ্যায়নের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন