কানাডায় বড়দিন বা ক্রিসমাসের এই ক্রান্তিলগ্নে যে সময় চলে ছুটির আমেজ, দেশটির নাগরিকরা পরিবার পরিজন নিয়ে যখন আনন্দ-ফূর্তিতে নিজেদের মধ্যে সময় কাটানোর কথা সে সময় সবকিছুই যেন স্থবির হয়ে আছে। আলোক সজ্জায় সজ্জিত হয়েছে অফিস আদালত ঠিকই, আর কেনাকাটাও কম বেশি হয়েছে বিভিন্ন মলে। পরিবহন গুলিতেও লেখা হয়েছে "হ্যাপি হলিডে"। যেন এক নিরব আনন্দের আমেজ। সবকিছু ঠিক থাকলেও এ বছর কেন জানি ম্লান হয়ে আছে সবকিছু, থেমে আছে গতি। ভারি হচ্ছে হৃদয়ের অনুভূতি।
বছরটাই কেন জানি এলোমেলো,তছনছ করে দিয়ে গেছে অসংখ্য পরিবারকে। অকালে ঝরে গেছে অনেকেই, অনেকেই নিদারুণ সংকটজনক পরিস্থিতির মধ্যে, আবার অনেকেই আশঙ্কা আর উদ্বিগ্নতায় দিনাতিপাত করছে। নশ্বর এই পৃথিবীতে আমরা কেউই থাকবো না। হিংসা, লোভ-লালসা ও করোনা মহামারী থেকে আমাদের দূর রেখে সকলের মাঝে সুখ শান্তি দান করবেন, ক্রিসমাস ইভ এ ঈশ্বরের কাছে এ বছর এটাই আমাদের প্রার্থনার বলছিলেন খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের এ্যনথনি জ্যাকব।
কানাডায় খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় অনুষ্ঠান 'বড়দিন' বা 'ক্রিসমাস ডে'। এই দিনটিকে ঘিরে চলে নানা আয়োজন। কানাডায় দিনটির আগে থেকেই শুরু হয় বিভিন্ন অফিসে বিভিন্ন ধরনের পার্টি। কিন্তু এ বছর করোনা ভাইরাস থাকার কারনে এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে গিয়ে ঘটা করে বা জাঁকজমকপূর্ণভাবে পালন হচ্ছে না কোনো অফিসের পার্টি অথবা বাড়িতে বড় কোনো আয়োজন। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, করোনার এই মুহূর্তে বেঁচে থাকাই সবচেয়ে বড় কথা।
সুস্থভাবে বেঁচে থাকাটাই এই মুহূর্তে বড় কথা। সমগ্র বিশ্ববাসীর সুখ শান্তি কামনা করে এ বছর আমরা ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করব যেন সব কিছুই আগের মত স্বাভাবিক হয়ে যায় এবং আমাদের করোনা মহামারীর এই ক্রান্তিলগ্ন থেকে ঈশ্বর আমাদের মুক্তি দান করেন- বলছিলেন জ্যাকব পরিবারের আরেক সদস্য পারিনা জ্যাকব। তিনি আরও বলেন, নিজ পরিবার নিয়ে এ বছর সম্পূর্ন ব্যতিঞমভাবে সময় কাটাবো, প্রস্তুতিমূলক ঘরে নিজ হাতেই পরিবারের জন্য কেক বানিয়েছি। ঘরে বসেই প্রার্থনা করব।
উল্লেখ্য কানাডার বিভিন্ন প্রদেশে "বড়দিন" এভাবেই পালিত হচ্ছে। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে অনেকেই ভার্চুয়ালি মিলিত হয়ে প্রার্থনা করছে। অনেকেই ভার্চুয়ালি কুশলাদি বিনিময় করছেন।
কানাডায় প্রতীক্ষিত ভ্যাকসিন সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে স্বাভাবিক জীবন-যাপনে জগতে সুখ-শান্তি আবার ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হবে, করোনা মহামারী থেকে মুক্তি দিবে, ঈশ্বর সকলের মঙ্গল করবেন "ক্রিসমাস ডে" বা বড়দিনে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের এমনটাই প্রার্থনা।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ