টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের আইল অব ডগস এলাকার সেলভর টাওয়ার ও থল টাওয়ার নামে বহুতল দু’টি ভবনের নর্দমার লাইন লিক করে নিচতলার কমন প্যাসেজে মানুষের মল ও বর্জ্যসহ পানি ছড়িয়ে পড়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত ২৬ নভেম্বর এই লিকের কারণে দু’টি ভবনের নিচতলার লিফটসহ পুরো জায়গা দূষিত হয়েছে।
থল টাওয়ারের নবম তলার বাসিন্দা বাংলাদেশি তাসনিম খানম ইস্ট লন্ডন এডভার্টাইজারকে এই দুঃসহ অভিজ্ঞতার কথা বর্ণনা করেন। এই বিল্ডিংয়ের ব্যবস্থাপক হাউজিং এসোসিয়েশন নটিং হিল জেনেসিসও (এনএইচজি) নিশ্চিত করেছেন এই ঘটনাটি ড্রেনের ব্লকের কারণে হয়েছে।
তাসনিম খানম অভিযোগ করেন, হাউজিং এসোসিয়েশন নটিং হিল জেনেসিস এই ঘটনায় দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেয়নি। তারা ঘটনার গুরুত্ব অনুযায়ী দ্রুত ব্যবস্থা নেয়নি। ২৯ নভেম্বর সোমবার পানি শুকিয়ে গেলেও ভবনের নিচতলা বর্জ্য ভর্তি ছিল, যা মারাত্মক দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছিল।
ভবনের অন্য বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, এই কয়েকদিন তাদের মনে হচ্ছিল যেন নরকে বাস করছেন। প্রায় বন্দি হয়ে পড়েছিলেন তারা। এই ভবনে অনেক শারীরিকভাবে ঝুঁকিপূর্ণ মানুষজন থাকেন। বাসিন্দারা বলেন, হাউজিং এসোসিয়েশনের উচিত ছিল শনিবারের মধ্যেই জরুরিভিত্তিতে এর সমাধান করা।
থল টাওয়ারের বাসিন্দা তাসনিম খানম আরও অভিযোগ করেন, ২০১৯ সাল থেকে এই টাওয়ারে এই ধরনের নানা সমস্যা লেগেই আছে। এমনকি নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে এক সন্ধ্যায় পুরো ভবনের পানি সাপ্লাই বন্ধ হয়ে যায়, যে সমস্যার সমাধান করতে হাউজিং এসোসিয়েশনের ৩ দিন সময় লেগেছিল। জরুরি সমস্যাগুলোর জন্য এই হাউজিং এসোসিয়েশনের কোনো জরুরি সেবা নেই বলেও অভিযোগ করেন তাসনিম খান।
এই ওয়ার্ডের কাউন্সিলার এন্ড্রু উড এবং ক্রিস্টান প্যারি বলেছেন, তারা এই হাউজিং এসোসিয়েশনের সঙ্গে ভবনের বাসিন্দাদের নিয়ে বৈঠকের ব্যবস্থা করছেন, যেনো সমস্যাগুলো নিয়ে আলোচনা করা যায়। কাউন্সিলার উড হাউজিং এসোসিয়েশনকে লিখিতভাবে বলেছেন, তাদের সার্ভিস অনেক খারাপ। বাসিন্দাদের আরও ভালো সার্ভিস ও সহায়তা পাওয়া উচিত।
হাউজিং এসোসিয়েশন নটিং হিল জেনেসিসের মুখপাত্র বলেন, আমরা খুবই দুঃখিত বাসিন্দারা যে সমস্যার মুখোমুখি হয়েছিলেন সেজন্য। আমরা এরই মধ্যে দু’টি ভবনকে আবারও পরিষ্কার করে বসবাসযোগ্য করে তুলছি।
হাউজিং এসোসিয়েশন দাবি করছে তারা ২৭ নভেম্বর সকালে প্রথম কল পেয়েছিলেন সমস্যার জন্য, এরপর তাদের নিয়মিত ঠিকাদার দুপুর ২টার মধ্যে ভবনগুলোতে পৌঁছায় এবং ব্লক হওয়া ড্রেন পরিষ্কার করে। এমনকি ইলেক্ট্রিশিয়ানও গিয়ে পৌঁছায় লিফট সচল আছে কিনা সেটা দেখার জন্য।
তারা নিশ্চিত করেছে, দুটি ভবনের নিচতলার কার্পেট পরিষ্কার করা হয়েছে পহেলা ডিসেম্বরের মধ্যেই। তাদের কর্মীরা ২৯ নভেম্বর সারা দিন থেকে কাজের তদারকি করেছে, স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেছে।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক