লন্ডনের একটি গ্যালারিতে চলছে বাংলাদেশের উপর আঁকা নানা চিত্রের প্রদর্শনী ও কর্মশালা। যেখানে ফুটে উঠেছে আবহমান বাংলার হাজার বছরের চিত্র, স্বাধীনতা আর অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের কথা। আর এইসব পেইন্টিংয়ের দর্শক যেমন ব্রিটিশ বাংলাদেশি নতুন প্রজন্ম তেমনি ভিনদেশের মানুষেরা। প্রদর্শনী দেখতে আসা সামান্থা হিউজ বলেন, অসাধারন রং আর সাবজেক্ট। আমি বরাবরই লোক সংস্কৃতির কাজ ভালোবাসি। এরকম পেইন্টিংয়ের মাধ্যমে অদেখা দেশের সাথে, তাদের সংস্কৃতির সাথে একটি যোগসূত্র তৈরি হয়।
বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতার ৫০ বছর এবং ৫০তম মহান বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে লন্ডন বারা অব টাওয়ার হ্যামলেটের আয়োজনে গত ৮ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়েছে সপ্তাহব্যাপী চিত্র প্রদর্শনী। লন্ডনের দ্য আর্ট প্যাভিলিয়ন গ্যালারিতে ‘ফাইভ : ফিফটি’ শিরোনামে এ প্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছে ব্রিটিশ–বাংলাদেশি চিত্রশিল্পী মুক্তা চক্রবর্তীর আঁকা ৯টি চিত্রকর্মসহ রাহিমা বেগম ও কারিমা হাসানের চিত্রকর্ম। চিত্রশিল্পী মুক্তা চক্রবর্তী বলেছেন, তিনি তার চিত্রকর্মে সব সময় আবহমান ও লোক সংস্কৃতিকে প্রাধান্য দেন যা ভিনদেশী মানুষকে আকৃষ্ট করে বাংলাদেশের প্রতি। আমি আপ্লুত যে ভিনদেশের মানুষ খুব সাদরে বাংলা দেশের সংস্কৃতি গ্রহণ করেছেন। তারা মন্তব্য বইয়ে এতো অসাধারণ কথা লিখে যাচ্ছেন, আমি অনুপ্রাণিত।
শনিবার চিত্র প্রদর্শনী দেখতে আসেন টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের মেয়র জন বিগস ও স্পিকার আহবাব চৌধুরী। মেয়র জন বিগস বলেন, অসাধারণ সব চিত্র। আমি সবচেয়ে বেশি আনন্দিত শিশুদের চিত্র কর্মশালা দেখে। গতকাল শনিবার ছিল চিত্রশিল্পী মুক্তা চক্রবর্তীর তত্ত্বাবধানে ব্রিটিশ বাংলাদেশি নতুন প্রজন্মকে নিয়ে কর্মশালা। এই কর্মশালায় অংশ নেয়া হাসিব নামের এক কিশোর জানান, ‘তিনি বাংলাদেশের মানচিত্র এঁকেছেন।’
আরেক কিশোরী শ্রাবস্তী বলেন, ‘সে বাংলাদেশের পতাকা হাতে বীর দামাল ছেলে এঁকেছে।’ চিত্র প্রদর্শনীতে অনেক বাংলাদেশি তাদের পরিবার নিয়ে অংশ নেন। তারা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে মৌনি চক্রবর্তীর ভিন্ন ধারার কাজ দেখেন। সাংবাদিক তৌহিদ চৌধুরী বলেন, ‘আমি আমরা দুই মেয়ে নিয়ে এসেছি। এরা বাংলাদেশের ইতিহাস দেখে দেশকে জানছে।’
কাউন্সিলর পুস্পিতা গুপ্তা বলেন,‘ লন্ডনের মাটিতে বাংলা চিত্রকর্মের মাধ্যমে দেশের ঐতিহ্য ছড়িয়ে দেওয়া অত্যন্ত গর্বের কাজ।’ ডক্টর সামিরুজ্জামান সামির বলেন, ‘আমি আমার বাচ্চাদের ওয়ার্ক শপে নিয়ে এসেছি। তারা খুবই খুশী বাংলাদেশের এতো সমৃদ্ধ সংস্কৃতি দেখে।’ দর্শকদের জন্য প্রদর্শনী প্রতিদিন খোলা থাকছে স্থানীয় সময় বেলা ১১টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। প্রদর্শনীটি শেষ হবে ১৬ ডিসেম্বর।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক