রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসি সংলগ্ন ভার্জিনিয়াস্থ ‘আই গ্লোবাইল ইউনিভার্সিটি’ ও বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ‘ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি’র মধ্যে একটি সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যে শিক্ষার্থী ও শিক্ষক বিনিময়সহ আইটি ভিত্তিক শিক্ষার উৎকর্ষে দুই বিশ্ববিদ্যালয় একসঙ্গে কাজ করতে সম্মত হয়েছে।
ভার্জিনিয়ার লিসবার্গ পাইকে আইজিওর নিজস্ব ক্যাম্পাসে বৃহস্পতিবার এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. মো. সবুর খান এবং আই গ্লোবাল ইউনিভার্সিটির চ্যান্সেলর ইঞ্জিনিয়ার আবু বকর হানিপ সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন। এর আগে ড. সবুর খান সস্ত্রীক আই গ্লোবাল বিশ্ববিদ্যালের ক্যাম্পাস পরিদর্শন করেন। এসময় তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি মালিকানাধীন একমাত্র এই বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর বাংলাদেশি-আমেরিকান প্রকৌশলী আবুবকর হানিপের এই উদ্যোগের প্রশংসা করে ড. সবুর বলেন, ‘একজন বাংলাদেশি যুক্তরাষ্ট্রে একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছেন-যা বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের জন্য অত্যন্ত গৌরবের বিষয়। আমি নিজেও গর্ব অনুভব করি এবং এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে বাংলাদেশ থেকে ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয় কিভাবে কাজ করতে পারে তারই একটি পরিকল্পনা নিয়ে আমরা এগোচ্ছি। সম্পর্কটিকে আমরা সর্বোতভাবে ফলপ্রসূ করে তুলতে চাই।’
মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. সবুর আরও বলেন, "একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শীর্ষে পৌঁছানোর জন্য যে বৈশিষ্ট্য ও সম্ভাবনা থাকা প্রয়োজন তার সবই এই বিশ্ববিদ্যালয়ের রয়েছে।"
‘আই গ্লোবাল ইউনিভার্সিটি'র চ্যান্সেলর আবুবকর হানিপ একজন উদ্যমী ও উদ্যোগী ব্যক্তিত্ব। দুই দশকের বেশি সময় ধরে মার্কিন মুল্লুকে তথ্য-প্রযুক্তি জগতে কাজ করছেন। এরই মধ্যে তার প্রতিষ্ঠিত আইটি প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান ‘পিপলএনটেক’ সর্বোচ্চ সফলতা দেখিয়েছে। এমন একজন উদ্যোক্তার নতুন এই উদ্যোগটিও সর্বোচ্চ সফলতা পাবে বলেই আমার বিশ্বাস’- যোগ করেন সবুর খান।
অন্যদিকে সবুর খানকে বাংলাদেশে তার নিজের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত আইটি প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান ও তারই ধারাবাহিকতায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে দেশ ও বিদেশে সুপরিচিত করে তোলার সাফল্যের জন্য অভিনন্দন জানিয়ে আবুবকর হানিপ বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্যগুলো একইরকম। আমরা চাই শিক্ষার উৎকর্ষ এবং তার জন্য আধুনিক সময়ের যুগোপযোগী শিক্ষাকেই আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি।’
চ্যান্সেলর আবুবকর হানিপ আরো বলেন, ‘বাংলাদেশে ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস আমি ঘুরে এসেছি। আই গ্লোবাল বিশ্ববিদ্যালয়কে অনেকটা একই ধাচে গড়ে তোলার ঐকান্তিক ইচ্ছা নিয়েই আমরা এগিয়ে চলছি’।
আই গ্লোবাল ইউনিভার্সিটির প্রধান অর্থ কর্মকর্তা ফারহানা হানিপ ড. সবুর খানকে বিশ্ববিদ্যালয়টি পরিদর্শনে আসা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে কাজ করতে সমঝোতা স্মারক সই করার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান। ফারহানা বলেন, একটি বিশ্ববিদ্যালয়কে কিভাবে শীর্ষে তুলে নিতে হয় তার প্রমাণ ড. সবুর এরই মধ্যে রেখেছেন। আই গ্লোবাল তার সেই পথচলাকে গুরুত্বের সাথে দেখে।
অনুষ্ঠানে আই গ্লোবাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. কারাবার্ক অতিথিদের সামনে বিশ্ববিদ্যালয়ের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য তুলে ধরার পাশাপাশি এরই মধ্যে যেসব সাফল্য দেখাতে শুরু করেছে তা উপস্থাপন করেন। ড. কারাবার্ক বলেন, ‘আবুবকর হানিপ বিশ্ববিদ্যালয়টির চ্যান্সেলর হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে এর খোলনলচে পাল্টে যেতে শুরু করেছে। গত এক বছরে বিশ্ববিদ্যালয়টি যেসব সাফল্য দেখাতে পেরেছে তা এর অতীতের দেড় দশকে সম্ভব হয়নি।’
প্রেসিডেন্ট ড. কারাবার্ক ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে বলেন, ‘আমি ওয়েব সাইট থেকে এই বিশ্ববিদ্যালয়টি সম্পর্কে জেনেছি এবং মুগ্ধ হয়েছি।’
এই সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন স্কুল অব আইটি'র পরিচালক প্রফেসর অ্যাপোসটোলস এলিওপোলস, স্কুল অব বিজনেসের পরিচালক অধ্যাপক মার্ক রবিনসন, সাইবার সিকিউরিটির অধ্যাপক ডেরেক স্মিথ, প্রফেসর নেকমি মুটলু, প্রফেসর জাফর পিরিম। শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষাকে সহজ করে তোলাই আমাদের কাজ-বলেন ড. অধ্যাপক মুটলু।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে আরও ছিলেন বাংলাদেশের অপর সুপরিচিত উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান, আই গ্লোবাল বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ভাইস প্রেসিডেন্ট ড. শ্যান চো ও মামুন ওয়াহাব। এছাড়াও ছিলেন এডমিশন ম্যানেজার সারাহ হেদায়েত, অ্যাসিস্ট্যান্ট আইটি ম্যানেজার কাজি বারী, অ্যাকাউন্ট্যান্ট কৌশিকা নাভাল, এডমিশন অফিসার সেমি জ্যাং প্রমুখ।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন