প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি এথেন্সের জাতীয় উদ্যান। প্রায় ৩৮ একর জায়গা নিয়ে রাজধানীর প্রাণকেন্দ্রে কালের সাক্ষী হয়ে আছে রাজকীয় এ বাগান। গ্রিক সংসদ ভবনের পেছনে অবস্থিত উদ্যানটিতে রয়েছে কিছু প্রাচীন ধ্বংসাবশেষ। এক সময় গ্রিক কবিদের আস্তানা হিসেবেও ছিল বেশ পরিচিতি। বর্তমানে সবার জন্য উন্মুক্ত, তাই শহরের কোলাহল আর যান্ত্রিক জীবন থেকে দূরে চিরসবুজের ছোঁয়া পেতে অনেকেই ঘুরতে যান এ উদ্যানটিতে।
চারদিকে নীরব-নিস্তব্ধ একটি পরিবেশ। কোথাও নেই মানুষের হইচই। প্রকৃতি যেন তার রূপ, রস ও সৌন্দর্য সবই ঢেলে দিয়েছে এথেন্স ন্যাশনাল গার্ডেনে।
ইতিহাস বলছে, ১৮৩৮ সালে রয়্যাল গার্ডেন নামে এ উদ্যানটির যাত্রা শুরু হয়েছিল। গ্রিসের প্রথম রানী রানী আমালিয়ার আদেশে তৈরি করা হয়েছিল এই উদ্যান। জার্মান কৃষিবিদ ফ্রেডরিক শ্মিট এই বাগানে বৃক্ষ রোপণের জন্য দায়িত্বে ছিলেন। তখন প্রায় ৫০০ টিরও বেশি প্রজাতির গাছ এবং ময়ূর, হাঁস এবং কচ্ছপসহ বিভিন্ন ধরনের প্রাণীর আমদানি করা হয়েছিল। সেসময় উদ্যানটি শুধু দুপুরে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত ছিল। কথিত আছে রানী আমালিয়া প্রতিদিন প্রায় তিন ঘণ্টা সময় বাগানে কাটাতেন। তিনি হাঁটতেন এবং ব্যক্তিগতভাবে বাগানের যত্ন নিতেন। পরে ১৯৭৫ সালে গ্রিসে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের পর উদ্যানটির নামকরণ করা হয় ন্যাশনাল গার্ডেন বা জাতীয় উদ্যান এবং এটি জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। এখন এটি সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত খোলা থাকে।
জাতীয় উদ্যানটির ভেতরে রয়েছে সরু গোলকধাঁধা পথ। আছে কাঠের বেঞ্চ। যেখানে বসে অনেকই ডাইরিতে লেখালেখি করেন, কেউ আবার বন্ধুদের সাথে গল্প করেন, আড্ডা দেন। উদ্যানটিতে রয়েছে বেশ কয়েকটি বন্য ছাগল, ময়ূর, মুরগি এবং অন্যান্য প্রাণীসহ একটি ছোট চিড়িয়াখানা। রয়েছে একটি বোটানিক্যাল মিউজিয়াম ও একটি খেলার মাঠ। বিশেষ করে একটি পুকুরে পালন করা হয় হাঁস, আরেকটিতে কচ্ছপ। বর্তমানে বাগানে প্রায় ৭,০০০ গাছ এবং ৩০,০০০ টিরও বেশি গুল্ম রয়েছে। সব মিলিয়ে প্রকৃতি প্রেমীদের হাতছানি দিয়ে ডাকছে এই জাতীয় উদ্যান।
বিডি প্রতিদিন/এমআই