“বিশ্বজুড়ে বাংলা বই” শ্লোগানে মঙ্গল শোভাযাত্রার মাধ্যমে ২৯ ও ৩০ অক্টোবর শনি ও রবিবার অনুষ্ঠিত হল ডিসিবইমেলা ২০২২। রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসির অদূরে স্প্রিংফিল্ডে অবস্থিত হলিডে ইন এক্সপ্রেসে অনুষ্ঠিত মেলার বিভিন্ন অনুষ্ঠানের জন্য নির্ধারিত স্থানগুলোর নামকরণ করা হয় বাংলাদেশের নদীর নামে।
হোটেলের বিশাল বলরুম “ময়ূরাক্ষী”তে পরিবেশিত হয় মূল অনুষ্ঠান। সেই সাথে সেমিনার ও তথ্যমূলক চিত্র প্রদর্শনী হয় “ধলেশ্বরী”তে। অন্যান্য অনুষ্ঠানমালার জন্য ব্যবহৃত স্থানগুলোর নাম ছিল “ইরামতি”, “কীর্তনখোলা” ও “কর্ণফুলী”।
এই বইমেলার উদ্বোধন করেন স্বাধীনতা পুরষ্কার ও একুশে পদক প্রাপ্ত শিল্পী সৈয়দ হাসান ইমাম। উদ্বোধনীর পরপরই অনুষ্ঠিত হয় বর্ণমালা শিক্ষাঙ্গনের সহযোগিতায় শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা। ইরাজ তালুকদার, আক্তার আহমেদ রাশা ও লায়লা হাসান এ পর্যায়ে বিচারকের দ্বায়িত্ব পালন করেন। শতাধিক কবি সাহিত্যিকের উপস্থিতিতে বিশাল এই যজ্ঞে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কবি আসাদ চৌধুরী, ড. নুরুন নবী, হাসান মাহমুদ, ড. আব্দুন নুর, নুরজাহান বোস ও নৃত্য সারথি লায়লা হাসান।
বইমেলার সাহিত্য পুরষ্কারের জন্য এ বছর মনোনীত হয়েছেন কবি আসাদ চৌধুরী। কবিতায় সারা জীবন অসামান্য অবদানের জন্য কবি আসাদ চৌধুরীকে এ পুরস্কারে ভূষিত করা হয়। মেলার প্রধান সমন্বয়ক, বিসিসিডিআই বাংলা স্কুলের প্রাক্তন সভাপতি আতিয়া মাহজাবীন নীতু স্বাগত বক্তব্য রাখেন। শুরুতেই মহিতোষ তালুকদার তাপসের নির্দেশনায় বইমেলা টিমের নিজস্ব পরিবেশনা ছিল “দেশের গান- প্রেমে, দ্রোহে, হৃদয়ে স্বদেশ, আমার বাংলাদেশ”। এই পর্বে মেলার প্রধান উপদেষ্টা রোকেয়া হায়দার ও লায়লা হাসান উপস্থিত সকল দর্শক মন্ডলীকে কায়মনে বাঙালি হবার শপথ পাঠ করান।
অনুষ্ঠান মালায় ছিল দশটি অনুচ্ছেদে লেখকদের সাথে বই নিয়ে আলাপচারিতা, দুইটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন, সাতটি সেমিনার, ভাস্কর্য প্রদর্শনী ও সাহিত্য ও বাংলা বিষয়ক দুটি বিশেষ পরিবেশনা। এছাড়া স্থানীয় ও কানাডা থেকে আগত শিল্পীরা বাংলা ও রাগাশ্রয়ী গান পরিবেশন করেন। কবিদের কবিতা পাঠ, পুঁথি পাঠ, গানের ছোঁয়ায় কবিতা, সমস্বরের বিশেষ আবৃত্তি, স্বল্প দৈর্ঘ ছবি দ্রোহ / রিভোল্ট, নারী-দা ডিভাইন স্টোন, ডকুমেন্টারি ৭১, একাত্তরের ওপরে ছবি নওফিল (প্রথম প্রদর্শনী) ও বাহান্নর ভাষা আন্দোলন ভিত্তিক ছবি মাদার টাং পরিবেশিত হয়। সেমিনার গুলোর সঞ্চালনায় ছিলেন আনিস আহমেদ, আশরাফ আহমেদ, আদনান মোর্শেদ, ডুয়াফি, বাংলা স্কুল, ইকবাল বাহার চৌধুরী। ইত্যাদি ও শ্রুতি নাটকে ছিলেন খুকু ও মিজান, পুঁথি পাঠে ছিল প্রিয়তা। অন্য আলোচনার বিষয়গুলোর মধ্যে ছিল এপার বাংলার সাহিত্য ওপার বাংলার সাহিত্য থেকে স্বতন্ত্র কেন, প্রবাসে বাংলা চর্চা, বাংলা গদ্যের বর্তমান অবস্থা।
সঙ্গীত শিল্পীদের মাঝে ছিলেন শংকর চ্যাটার্জি, শর্বরী গঙ্গোপাধ্যায়, ডরোথি বোস, গৌরব গল্প, মনিকা মুনা, ক্লেমেন্ট স্বপন গোমেজ, মেরি স্টেলা, ফয়সাল কাদের, ও নাজিয়া শাওন।
অংশগ্রহণকারি সংগঠনের মধ্যে ছিল ডুয়াফি, বাংলা স্কুল, বর্ণমালা, বিসিডিডিআই বাংলা স্কুল, ঘুংঘুর ও রাইটার্স ক্লাব ইউএসএ।
ধ্রুপদের নৃত্যদলের পরিবেশনায় বইমেলা ২০২২ এর পর্দা নেমে আসে। সার্বিক অনুষ্ঠান পরিকল্পনায় ছিলেন সামিনা আমিন, শিমূল মৌ, আতিয়া মাহজাবিন নিতু, আনোয়ার ইকবাল কচি, ড. নজরুল ইসলাম, দস্তগীর জাহাঙ্গীর, ও দিনার মনি। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সামিন আমিন, আনোয়ার ইকবাক কচি, ইশারাত জাহান মিতা, নাসরিনা আহমেদ মুন্না, ফকির সেলিম ও শিমূল মৌ।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন