অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন স্থানে অক্টোবর নভেম্বর মাসে তাকালে কম বেশি দেখা যায় বেগুনী নীল রংয়ের পাতা বিহীন একটি ফুল গাছ। যার নাম হচ্ছে জ্যাকারান্ডা। সাধারণত রাস্তার ধারে সারিবদ্ধ ভাবে লাগানো হয় আলংকারিক বা সৌন্দর্য বৃক্ষ হিসেবে।
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দেওয়া বাংলা নাম হচ্ছে “নীলকণ্ঠ”। জ্যাকারান্ডা ফুলের রঙ বেগুনী বা নীল রঙের হয়ে থাকে, বসন্তে কোনো পাতা থাকে না। ফলে গোটা বৃক্ষটিকে মনে হয় বেগুনী বা নীল বৃক্ষের মত। এই ফুল গাছ বসন্তে বেশ স্বাপ্নিক একটা আমেজ নিয়ে আসে। এই ফুলের নিজস্ব সৌন্দর্যের জন্য বিভিন্ন কৃষ্টিতে, সাহিত্যে, গানে বাজনায় এই ফুলের কথা আছে। এমনকি কুসংস্কারেও বিভিন্ন জাতিতে রয়েছে জ্যাকারান্ডা ফুলের কথা।
স্যার জেমস্ মার্টিন এর উদ্যোগে জ্যাকারান্ডা ফুলগাছের বীজ ১৮৫০ থেকে ১৮৬০ সালের দিকে ব্রাজিলের রিও ডি জেনেরিও থেকে প্রথম অস্টেলিয়াতে এসেছে বলে ধারণা করা হয়। ১৫০ বছরের কিছু বেশি সময় পূর্বে এই গাছ অস্ট্রেলিয়াতে প্রবেশ করেছে অথচ বর্তমানে অস্ট্রেলিয়াবাসী জ্যাকারান্ডা বৃক্ষ ছাড়া তাদের বসন্তের পরিবেশ চিন্তাই করতে পারে না।
সিডনির কোগরা এলাকার মধ্যে ফ্রইস রিজার্ভে অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে পুরো পার্কে সারি সারি জ্যাকারান্ডা ফুলে ফুলে বেগুনী হয়ে থাকে। এ উপলক্ষে প্রতি বছর অক্টোবরের শেষ সপ্তাহ ও নভেম্বরের প্রথম দ্বিতীয় সপ্তাহে "ফাগুন হাওয়া" ইনক অস্ট্রেলিয়া গত ২০১৮ থেকে মেয়েদের নিয়ে জ্যাকারান্ডা মিলন মেলা করে।
এবছরে ৫০ জন নারী নিয়ে ১২ নভেম্বর (শনিবার) অনুষ্ঠিত হয় "জ্যাকারান্ডা বিলাস" ২০২২। ফুলের সাথে মিলিয়ে সবাই মিলে চমৎকার বেগুনী পোশাকে নিজেদেরকে সাজিয়েছিল প্রত্যেক নারী। চারিদিকে যেন এক বেগুনী রং এর আনন্দ উৎসব। সবাই মন খুলে আড্ডায় মেতে ওঠেন। বিভিন্ন বেগুনী সরঞ্জাম দিয়ে জায়গাটা সুন্দর করে সাজানোর পাশাপাশি অনেক মুখরোচক খাবার পরিবেশন করা হয়। অনুষ্ঠানের পরিচালক তিশা তানিয়া বলেন, এত বেশি সাড়া আমরা এই অনুষ্ঠানের জন্য পেয়ে থাকি যে ঘোষণার আগেই টিকেট বুক হয়ে যায়। হয়তবা ভবিষ্যতে এখানে জ্যাকারান্ডা উৎসব পালিত হবে বড় করে এবং অনেক অনেক পর্যটক আসবে এই স্বপ্ন ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে।
এই বছরে অনুষ্ঠানে সহযোগিতা করে ড্রিম কী রিয়েলিটি, এ রিয়েলস্টেট ইন রকডেল, সবি‘এস কালেকশন, হ্যাপিনেস অস্ট্রেলিয়া। বিশেষ সহযোগিতায় ছিলেন, নাসির উদ্দিন, মাসহুদা জামান ছবি, শুভ সাথী, নাজমুল হক, কিশোয়ার আখতার কাকলি, আফরিন জাহান, পলি ফরহাদ এবং আয়েশা তন্বী।
সবশেষে জাকারান্ডার সাথে মিল রেখে অসম্ভব সুন্দর একটা কেক কাটার মধ্য দিয়ে শেষ হল "জাকারান্ডা বিলাস-২০২২"।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন