আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে জেনেভাস্থ বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন কর্তৃক আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সকল ভাষার প্রতি শ্রদ্ধা একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, সহনশীল এবং শান্তিপূর্ণ সমাজের পূর্বশর্ত বলে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় মত ব্যক্ত করেন। জেনেভায় জাতিসংঘের কার্যালয়ে আন্তর্জাতিক আবহে দিবসটি পালিত হয়।
রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ সুফিউর রহমান তার স্বাগত বক্তব্যে মাতৃভাষা সংরক্ষণ ও প্রচারের পাশাপাশি কিছু ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জন্য মাতৃভাষায় প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রমের জন্য বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন। রাষ্ট্রদূত রহমান বলেন, ভাষার অবক্ষয় রোধে বহুভাষিক শিক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ সময় তিনি জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে বাংলাকে জাতিসংঘের অন্যতম দাপ্তরিক ভাষা করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন।
আলোচনায় অংশ নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া, পানামা এবং ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূতগণ ভাষাগত অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে তাদের নিজস্ব দেশের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন এবং ভাষার শক্তিকে কাজে লাগিয়ে জনগণকে সংযুক্ত করা এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করার ওপর জোর দেন। তারা বিশ্বে ভাষাগত ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য রক্ষার প্রয়োজনীয়তার ওপরও জোর দেন।
অনুষ্ঠানে প্যানেলিস্ট হিসেবে আরও বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক ও বিশিষ্ট লেখক ড. সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম এবং ডিভিশন অব কনফারেন্স ম্যানেজমেন্টের পরিচালক মিস কিরা ক্রুগলিকোভা। ইউনিভার্সিটি অব অ্যাপ্লাইড সায়েন্সেস জেনেভা এর পরিচালক ড. জোয়েল লিবোয়া সাংস্কৃতিক পার্থক্য বোঝার এবং উপলব্ধি করার জন্য বহুভাষিক প্লাটফর্মে সামাজিক সাংস্কৃতিক শিক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরে মূল বক্তব্য রাখেন। ইউনেস্কোর মহাপরিচালকের পক্ষে জেনেভাস্থ ইউনেস্কো অফিসের পরিচালক মিজ্ অ্যানা লুইজা থম্পসন-ফ্লোরেস মহাপরিচালকের বাণী পড়ে শোনান। সকল প্যানেলিস্ট ইউনেস্কোতে ২১শে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালন করার জন্য বাংলাদেশের উদ্যোগকে প্রশংসার সাথে স্মরণ করেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের ওপর একটি প্রামাণ্য ভিডিও চিত্র পরিবেশন করা হয়। জাতিসংঘ সদস্য দেশসমূহের উচ্চ পর্যায়ের কূটনীতিক, জাতিসংঘের কর্মকর্তা, সমাজকর্মী ও জেনেভাস্থ বাংলাদেশি কমিউনিটির সদস্যবৃন্দের উপস্থিতিতে আয়োজিত এ অনুষ্ঠান ছিল কানায় কানায় পূর্ণ।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল