‘তোমার জীবন আজ চারিদিকে বস্তুর জীবনে, তোমার হৃদয় আজ আকরিক লোহায়, দস্তায়, টিনে।/আজো তুমি প্রয়োজন-অপ্রয়োজনের চেয়ে বেশি গভীর প্রকট চাহিদার মতো লেগে আছো।’ কবি আবিদ আজাদের কবিতার এ দুটি চরণের মতোই আমাদের চলিষ্ণুু জীবন। এই অবস্থা থেকে উত্তীর্ণ হয়ে যাদের হৃদয়ে কল্পনা ও কল্পনার ভিতরে চিন্তা আর অভিজ্ঞতা বাসা বাঁধে তারাই সাহিত্যের পথে যাত্রা করতে পারে। অন্যভাবেও যদি বলা হয় তা-ও এ সত্যেরই প্রতিধ্বনি। সাহিত্য কল্পনার জীবনের বহিঃপ্রকাশ। সাহিত্য হলো আনন্দের উৎস অন্যথা মানবাত্মার আনন্দের উৎস হলো সাহিত্য। আসলে এ পথ বন্ধুর, এ পথ কখনোই কুসুমাস্তীর্ণ নয়। ফুল থেকে বোলতা নেয় বিষ, মৌমাছি নেয় মধু। সাহিত্যিক জীবনের বাঁকে বাঁকে তাই কখনো বিষ অর্জন হয়, কখনো জীবনের বিসর্জন ঘটে। তবু শঙ্কা-সংশয়ের মধ্যেই অমরত্বের জিয়নকাঠির সন্ধানে পেলব হৃদয়ের মানুষেরা এ পথেই হাঁটেন।
যশোর প্রশস্তি...
এ জেলায় জন্ম নেওয়াটাকে গৌরবের বলে অহমের বিষয় করে তোলেন কবি-সাহিত্যিকরা। তাই তো তাঁদের কলমে বারবার যশোর প্রশস্তি উঠে আসে। পঞ্চাশ দশকের কবি আজীজুল হকের ১৯৮৫ সালে রচিত ‘প্রশস্তি’ শিরোনামের মুক্তগদ্যে এ বিষয়ে কাব্যিক বর্ণনা ফুটে উঠেছে। সেবার যশোরে এক সাহিত্য সম্মেলনে কবি সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়সহ এসেছিলেন অনেক রথী-মহারথী। আজীজুল হক লেখেন-
“এদেশের বিদ্রোহী কবিকণ্ঠে ধ্বনিত হয় মহাকাব্যের সামুদ্রিক গর্জন, সেই কণ্ঠেই অনুরণিত হয়ে ওঠে কপোতাক্ষের কুলুকুলু ধ্বনি। পৃথিবীর মানুষ কান পেতে শোনে এখানকারই এক রবিশঙ্করের তিনতারের সম্মোহনী ঝঙ্কার। এখানেই উচ্চারিত হয়েছে, হজরত গরীব শাহ, হজরত শাহসুফী আবদুল করিম আর মুন্সী মেহেরুল্লার অমৃতময় বাণী।”
তিনি আরও লেখেন-
“এখানেই জন্ম নিয়েছে বিশ্ববন্দিত উদয়শঙ্কর, যাঁর অপূর্ব তনুমুদ্রায় লীলায়িত হয়ে উঠেছে তাণ্ডব আর লাস্যনৃত্যের ধ্রুপদী ছন্দ। সাত সমুদ্র পাড়ি দিয়ে এখানেই ফিরে আসে বাঁধন ছেঁড়া ঘরের ছেলে মধুসূদন সাগরদাঁড়িতে, দুফোঁটা চোখের জল ফেলতে, আর এখানকার এই মধুমতীর কূলে দাঁড়িয়ে ফররুখ আহমদ শুনতে পান সাত সাগরের মাঝি সিন্দাবাদের সপ্তসমুদ্র যাত্রার আহ্বান। আশরাফ আলী খান তার কঙ্কালের করোটিতে বাজান অসহায় মানুষের হাহাশ্বাস এখানে, সুলতান আঁকেন শ্রমশিল্পীর পেশী মুদ্রার প্রত্যয়গূঢ় সৃজনলীলা। বাংলাদেশের কবিতীর্থ যশোর, নৃত্য-সংগীত অভিনয়ের উৎসভূমি যশোর... যশোর কেবল সকলের যশ হরণই করে না, সকলের জন্য আহরণও করে যশ।”
কতিপয় ধ্রুবতারা...
‘প্রশস্তি’তে অনেকের নাম এসে গেছে। এরাই আমাদের সেইসব নক্ষত্র, যাদের চিহ্নিত করে যুগে যুগে পথ হারানো ‘নাবিক’ পথের দিশা পেয়েছেন।
আরও যাদের ধারণ করে ধন্য হয়েছে যশোর তারা হলেন-
কবি মান কুমারী বসু, অরুণ মিত্র, গোলাম মোস্তফা, সৈয়দ আলী আহসান, সৈয়দ আলী আশরাফ, কাজী কাদের নওয়াজ, মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান, সৈয়দ লাল মুহাম্মদ, কথাসাহিত্যিক-ঔপন্যাসিক হেমন্দ্র প্রসাদ ঘোষ, মনোজ বসু, ধীরাজ ভট্টাচার্য্য, শিশির কুমার ঘোষ, গৌর কিশোর ঘোষ, কথাসাহিত্যিক দিলারা হাশেম, নিমাই ভট্টাচার্য্য, খন্দকার মজহারুল করিম, প্রাবন্ধিক আবুল হোসেন, সৈয়দ সাজ্জাদ হোসেন, সৈয়দ আকরম হোসেন, হাসান জামান, হোসেনউদ্দিন হোসেন, মুস্তাফা মাসুদ, মাহমুদুল হক, গীতিকবি মোহাম্মদ রফিকউজ্জামান। আর সময়ের তারকোজ্জ্বল হয়ে আছেন-আনোয়ারা সৈয়দ হক, গল্পকার সেলিম মোরশেদ কবি রেজাউদ্দিন স্টালিন, দারা মাহমুদ প্রমুখ।
বলগা হাওয়ায় লিটল লিটল...
...‘লাইক আ ডাইমন্ড ইন দ্য স্কাই’-সাহিত্যের আকাশে ছোট ছোট ডায়মন্ডের মতো চিকচিক করছে যশোরের বিগত দিনের লিটল ম্যাগাজিনগুলো। এ ক্ষেত্রে গৌরবময় স¥ৃতিগাথা হয়ে আছে মাত্র কয়েকটি, আর টিমটিমে আলোয় ম্র্রিয়মাণ হাতে গোনা কয়েকটি এখনো দোলা দেয়। একসময় বের হয়েছে- চর্যা, প্রমা, প্রহর, বিবর, সূর্যঘড়ি, জংশন, শিল্পগ্রাম, স্বরবর্ণ, নৈকট্য। তবে অনেক লিটলম্যাগ না টেকার কারণ হলেন বলগা হাওয়ায় যে সাহিত্য হওয়ার কথা, সেটা হয়নি। বরং প্রতিষ্ঠিত লেখকদের সংকলন হয়েছে। মনে রাখা দরকার এ লিটল আসলে লিটল নয়, অনেক বড় ব্যাপার। এককালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে যেটির গোড়াপত্তন হয়েছিল, সেটির সূত্রপাত হয় এখানেও। কালপরিক্রমায় যশোরের আত্মচৈতন্যের ছোট কাগজ ‘প্রতিশিল্প’ এরই ধারাবাহিকতায় পরিপুষ্ট।
সাহিত্য-সংস্কৃতির সূতিকাগার খ্যাত এ অঞ্চলের মানুষের চিন্তাকাঠামো স্বাধীনতাপ্রিয়। নৃতাত্ত্বিকভাবেই বোধ হয় এমনই। তা বারবার প্রোজ্জ্বল হয়েছে তরুণের কাছে, যারা সংস্কৃতির জড়তাকে ছিন্ন করার প্রণোদনায় জাগরিত হয়। কেননা, তাদের নির্মাণ-বিনির্মাণের কুশলতায় সমৃদ্ধ হয়েছে জনপদ; সুনিপুণ বিন্যাস-সৃষ্টিউল্লাসে দৃঢ় করেছে তারুণ্যকে।
সেই উদ্দীপ্ত তারুণ্যের সামনে-গৌরবময় যশোরে নব্বই দশকে ভাঙাগড়ার সংস্কৃতির মেলবন্ধন প্রয়োজনী হয়ে ওঠে। সেসময় প্রতিশিল্পকে কেন্দ্র করে আলাদা স্বর তৈরি হয়। কবি পাবলো শাহি, অসিত বিশ্বাস, দুর্বাশা দুর্বার, বাবলু ভট্টাচার্য্য, টিটো জামান, মারুফুল আলম, মহিউদ্দীন মোহাম্মদ, সৈকত হাবীব, শেখ সিরাজউদ্দীন, মাসুমুল আলম, অতীন অভীক, ওয়াহিদুজ্জামান অর্ক, কবির মনি, মহসীন রেজা, সাদি তাইফ, আজিমুল হক, চিত্রশিল্পী মোজাই জীবন সফরি, তাবিথা পান্না, সাহিদুর রহমান, অন্যুন পৃন্স, জন প্রভুদান প্রমুখের মাধ্যমে এই জনপদ পুনর্বার আলোকিত হয়।
সবাই একসঙ্গে থেকে সোৎসাহে লিখেছেন- কবিতা, গল্প, নাটক, গান, চিত্রনাট্য, নৃত্যনাট্য। এঁকেছেন ছবি, করেছেন আবৃত্তি।
এসব করে সফলতা কোথায়? কেউ জানে না। তবে এটা বুঝেছে ‘সাপের মুখে পা দিয়ে’ নাচার মন্ত্রণা এটা। প্রতুলের গানের মতো তাই ডিঙ্গা ভাসিয়েছে সাগরে।
পুরোনো দিনের হাওয়া...
কবি ও সাহিত্যিকদের সাহিত্যচর্চার জন্য প্রাচীনকাল থেকে বহু সংগঠন ও সাহিত্যকেন্দ্র যশোরে গড়ে উঠেছে।
স্বাধীনতা পূর্বকালে কবি অবলাকান্ত মজুমদার শহরের নিজ বাড়িতে ‘যশোর সাহিত্য সংঘ’ স্থাপন করে প্রতি রবিবার সাহিত্যের আসর বসাতেন। তিনি নিয়মিতভাবে মাসিক ‘শতদল’ পত্রিকা প্রকাশ করতেন। তার আসরে কলকাতা ও দেশের বিখ্যাত লেখকরা অতিথি হিসেবে এসেছেন।
এখানে যেসব কেন্দ্রে সাহিত্যচর্চা হয় তার মধ্যে যশোর ইনস্টিটিউট পাবলিক লাইব্রেরি অন্যতম। পাকিস্তান আমলে প্রতি রবিবারে এখানে সাহিত্যের আসর বসত। ওইটি দেশ স্বাধীনের পর শনিবাসরীয় আসর হিসেবে জারি হয়-যা এখনো চলমান। তবে আগের সে জৌলুস নেই। এখানে প্রবীণ, নবীন কবি সাহিত্যিকরা স্ব-স্ব লেখা নিয়ে আসেন এবং পাঠ করেন। অনুরূপভাবে মাহমুদুল হক তার ‘নতুন দেশ’ পত্রিকা অফিসে সাহিত্যের আসর বসাতেন এবং তার পত্রিকায় কবি সাহিত্যিকদের লেখা প্রকাশ করতেন। এ ছাড়া যশোর সাহিত্য পরিষদে একসময় রবিবাসরীয় সাহিত্য আড্ডা হতো। যেটির অস্তিত্ব এখন আর নেই। এখান থেকে বহু কবি-সাহিত্যিক তৈরি হয়েছেন।
সহযাত্রী একই তরণির...
কবি ও সাহিত্যিকের যাত্রাপথ আসলে এক দীর্ঘ ও বিচিত্র পথ। এই পথে যেমন আছে আনন্দ ও সৃষ্টির উল্লাস, তেমনই আছে বেদনা, সংগ্রাম ও অস্তিত্বের সংকট। তবু এ পথকে একই তরণির সহযাত্রী হিসেবে বেছে নেন তারা।
এ পর্যায়ে আরও কিছু নাম বলা যেতে পারে যারা এই ভূভাগে সাহিত্যকর্মে নিজেদের নিবেদন জারি রেখেছেন, কেউবা নিভে গেছেন জীবন থেকে। তারা হলেন- গল্পকার শহিদুল আলম, পাভেল চৌধুরী, প্রাবন্ধিক আমিরুল আলম খান, ছড়াকার ফারুক নওয়াজ, কবি আবদুর রব, ফখরে আলম, কবির হোসেন তাপস, সৈয়দ রানা মুস্তাফি, মোশাররফ হোসাইন খান, নান্নু মাহবুব, উত্তম চক্রবর্তী, মাশুক শাহি, মোস্তফা সোহেল আহমেদ, কাজী মাজেদ নওয়াজ, নাভিল মান্দার, অনুপ চণ্ডাল, স্বপন মোহাম্মদ কামাল, বিপুল বিশ্বাস, ইফতেখার ইকবাল, রহমান রেজা, গল্পকার রেহমান শামস, রুকুনুদ্দৌলা, নাসির হেলাল, বেনজিন খান, মো. শামছুজ্জামান, মমতাজ উদ্দিন, মাসুদুল আলম প্রমুখ।
এ ছাড়া আবদুর রহিম আসাদী, বেদুইন সামাদ, খসরু পারভেজ, মকবুল মাহফুজ, ফজল মোবারক, সায়ীদ আবুবকর, মেরিনা নাসরিন, আশান উজ্জামান, শাফি সমুদ্র, পলিয়ার ওয়াহিদ, মিলন আশরাফ, আনোয়ারুল ইসলাম, কাসেদুজ্জামান সেলিম, লিখন মালাকার, শওকত শাহি, সবুজ শামীম আহসান, বাপ্পী শাহরিয়ার, কুতুবুদ্দিন আমীর, গীতিকবি আবু জাহিদ, তহিদ মনি, পদ্মনাভ অধিকারী, শাহরিয়ার সোহেল, কামাল মুস্তাফা প্রমুখ।
আলাদা করে যাদের নাম না বললে অতৃপ্তি থেকে যাবে তারা হলেন-কবি ও ধর্মপ্রচারক শাহ আমানত উল্লাহ বুলবুলি, আজহার উদ্দিন ঠাকুর, স্বভাব কবি আজগার আলি, ওয়াজেদ আলি প্রমুখ।
নতুনের কেতন ওড়ে...
নতুনেরা আসে কেতন উড়িয়ে, তারা ভাঙে আর নির্মাণ করে; ‘সৃষ্টি সুখের উল্লাসে’ মেতে ওঠে। তাই তারুণ্য পূজনীয়। এ জনপদে হয়তো সুকান্ত নেই, কিন্তু আমাদের আছে সঞ্চয় প্রথম। তার অকাল প্রয়াণ যশোরবাসীকে একদিন কাঁদিয়েছিল। কেননা কবিতায় তার অবদান ঈর্ষণীয়। সঞ্চয়ের আছে বিশাল কবিতা সংগ্রহ, পড়লে সত্যটা শনাক্ত করা যাবে। তারুণ্য আসলে নতুন পথের সন্ধান দেয় সবসময়। এর ব্যতিক্রম হয়নি যশোরের তরুণ কবিদের ক্ষেত্রেও। কালপরিক্রমায় তাই বারবার গীত হয় শিল্প সৃষ্টিতে তরুণের জয়গান।
এখন যেসব কবি শূন্য দশক থেকে আজও সৃজন নেশায় মেতে আছেন তাদের কথা বলব। বাস্তবত সে তরুণদের নিয়ে অনেক স্বপ্ন এই জনপদের মানুষের।
আমরা যাদের নাম বলছি তাদের অনেকের বেশকিছু গ্রন্থ বেরিয়েছে। আবার অনেকের প্রকাশনা না থাকলেও শব্দবারুদের পরিশুদ্ধতা দেখিয়েছেন তাদের লেখায়। ধারাবাহিকভাবে তাদের কজনের নাম উল্লেখ করা হচ্ছে এ পর্বে। কবিতা ও গল্পে নিজের স্থান পোক্ত করে নিয়েছেন সৈয়দ আহসান কবীর। বরাবরই তিনি সাহিত্যে মুনশিয়ানার ছাপ রেখেছেন সৃজনমত্ততায়। গদ্য ও কবিতা নিয়ে আপন আলোয় উদ্ভাসিত সৈয়দ তৌফিক উল্লাহ, আরশি গাইন, শিরিন সুলতানা, শান্তনু চক্রবর্তী, তৃষা চামেলী, বাশার মাহফুজ, তাসলিমা রুবি, মুস্তাফিজুর রহমান মুস্তাক, হুমায়ুন আফতাব, মিলন রহমান, মামুন আজাদ, সাইদ হাফিজ, টিপু সুলতান, সবুজ শামীম আহসান, সাইফুদ্দিন সাইফুল, জসিম মাহমুদ, মামুন মেহমুদ ও অনন্যা জান্নাত প্রমুখ। আরও আছেন কাব্য-অন্তপ্রাণ শাহানূর আলম উজ্জ্বল, অর্ক দাশগুপ্ত, মাহমুদা রিনি, সফিয়ার রহমান, সেলিম রেজা সেলিম, সাহিদুর রহমান, জাহিদ আক্কাস, লিখন আলম, অনীক মাযহার, শাহীন রহমান, হালিমা মুক্তা, রাজ পথিক, সুমন রেজা, আরিফ জামান, মানবেন্দ্র সাহা, সামিয়াতুল সামি, মুনীর আল-মুসান্না, জান্নাতুন নেছা, সাজ্জাদ হোসেন জ্যোতি, সোহান রেশব, সুমাইয়া ইসলাম রোজা, শান রাইন প্রমুখ। এ ছাড়া যৌবনেও দুরন্তকিশোর আব্রাহাম তামিম গল্প-কবিতার পাশাপাশি চিত্রনাট্যে নিজের স্থান করে নিয়েছেন দুর্বার গতিতে। যার ধারা অব্যাহত থাকলে নতুন এক আলো পেতে পারে যশোর।
শেষ কথা
নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর একটা কবিতা আছে ‘অমলকান্তি’। সেই কবিতায় ‘কেউ মাস্টার হতে চেয়েছিল, কেউ ডাক্তার, কেউ উকিল। অমলকান্তি সেসব কিছু হতে চায়নি। সে রোদ্দুর হতে চেয়েছিল।’ সবার সব চাওয়া পূর্ণ হয়েছিল, কিন্তু অমলকান্তি রোদ্দুর হতে পারেনি। সবাই সব কিছু হতে চায় কিন্তু সবার সবকিছু হওয়া সম্ভব হয় না। শিল্প-সাহিত্য একটি কঠিন সাধনার পথ। অনেকে এ পথে যাত্রা করেন। তবে অমলকান্তির মতো ইচ্ছা পূরণ হয় না। যারা নিজেকে একদিন জয় করতে পারেন, তারাই হন ইতিহাস। জনপদে তাঁদের নাম লেখা থাকে স্বর্ণাক্ষরে।