চট্টগ্রামের বোয়ালখালীর কধূরখীল এলাকায় লোকালয়ে নেমে আসা সেই বন্যহাতির পালের আক্রমণে তিনজন নিহত হয়েছেন। ফসলি জমিতে কাজ করতে গেলে রবিবার সকালে পৃথক স্থানে হাতির আক্রমণে তাদের মৃত্যু হয়।
মৃতরা হলেন- আবু তাহের মিস্ত্রি (৬৫), জাকের হোছাইন (৬৫) ও আব্দুল মাবুদ (৬০)। এ ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। হাতির পালটি এখনো লোকালয়ে অবস্থান নেওয়ায় এ রকম আরও দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসীরা।
বোয়ালখালী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মুহম্মদ হেলাল উদ্দীন ফারুকী জানান, মৃত আবু তাহের উপজেলার মধ্যম কধুরখীল গ্রামের শরীফ পাড়ার আব্দুল লতিফের ছেলে। ভোর সাড়ে ৬টার দিকে মধ্যম কধুরখীল গ্রামের চৌধুরীহাট বাজারে সোলতান কমপ্লেক্সের পাশে জমিতে কাজ করার সময় হাতির আক্রমণের শিকার হয়ে ঘটনাস্থলে মারা যান। একই স্থানে হাতির আক্রমণে আরও একজন আহত হন। নিহত জাকের হোছাইন উপজেলার চান্দেরহাট গ্রামের আব্দুল মোনাফের ছেলে। সকাল ৭টার দিকে বাড়ির পাশে জমিতে কাজ করার সময় হাতির আক্রমণে গুরুতর আহত হলে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এছাড়া আব্দুল মাবুদ উপজেলার শ্রীপুর-খরণদ্বীপ ইউনিয়নের কুমার পাড়ার মৃত আলী আহমদের ছেলে। খরণদ্বীপ শান্তি বাজারের পাশে জমিতে কাজ করার সময় হঠাৎ হাতির আক্রমণে ঘটনাস্থলে তার মৃত্যু হয়। মৃত তিনজনের মরদেহ পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
এদিকে, গত দুইদিন ধরে লোকালয়ে অবস্থান করা হাতির পালটিকে পাহাড়ি জঙ্গলে ফিরিয়ে নিতে প্রশাসন ও বনবিভাগের গাফিলতি রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন চরনদ্বীপ এলাকার বাসিন্দা কফিল উদ্দিনসহ অনেকে। কৌশলে হাতির পালটিকে তাড়ানো গেলে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটত না বলে দাবি করেন তারা।
প্রসঙ্গত, শনিবার সকাল থেকেই বাচ্চাসহ ৯টি বন্যহাতির একটি পাল উপজেলার কধূরখীল এলাকার লোকালয়ে চলে আসে। এ সময় দূর-দূরান্ত থেকে উৎসুক মানুষ এসে ওই এলাকাটিতে ভিড় করে। উপজেলা পুলিশ প্রশাসন ও ফায়ার সাভির্সের সহযোগিতায় শনিবার দিনভর স্বাভাবিক ছিল হাতির পালটি। পুলিশ এবং ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা হাতির পালটিকে পাহাড়ি এলাকায় ফিরিয়ে দিতে একাধিকবার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়।
পুলিশ কর্মকর্তা হেলাল উদ্দীন বলেন, শনিবার করলডেঙ্গা পাহাড় হাতির পালি বোয়ালখালীর লোকালয়ে চলে আসে। দিনভর বিচরণ শেষে রাতে হাতির পালটি বিভক্ত হয়ে পড়ে। একটি দল এখনো উপজেলার কধুরখীল, পোপাদিয়া, শ্রীপুর-খরণদ্বীপ এলাকায় অবস্থান করছে। পাল থেকে চারটি হাতি পূর্বদিকে চলে গেছে। সেগুলোর অবস্থান জানা যায়নি।
বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম