প্রতীক নিয়েই এবার ভোটযুদ্ধের প্রচারণায় মাঠে নামছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের মেয়র, সংরক্ষিত ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা। করোনা পরিস্থিতির কারণে স্থগিত হওয়া চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচন ২৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
নির্বাচনকে ঘিরেই আজ শুক্রবার থেকে প্রার্থীরা প্রচার- প্রচারণা শুরু করছেন। চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হবে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনেই (ইভিএম)। এরই ধারাবাহিকতায় কর্মতৎপরতায় ফিরেছেন চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন কার্যালয়।
ইতিমধ্যে চসিক নির্বাচনের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা স্ব স্ব কাজও শুরু করেছেন। তবে চসিক নির্বাচনে একজন সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলরসহ ৪ জন কাউন্সিলর মারা যাওয়ায় উক্ত চার ওয়ার্ডে নতুন তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। তফসিল মোতাবেক এসব ওয়ার্ডের প্রার্থীদের আজ শুক্রবার প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হবে। এর পরপরই প্রচার-প্রচারণাও শুরু করতে পারবেন বলে নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যায়, নৌকা প্রতীক নিয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী রয়েছেন নগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী, ধানের শীর্ষ নিয়ে বিএনপি থেকে নির্বাচন করছেন নগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন ধানের শীষ প্রতীক, বাংলাদেশ ইসলামিক ফ্রন্টের এম এ মতিন (মোমবাতি), ন্যাশনাল পিপলস পার্টির আবুল মনজুর (আম প্রতীক), ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের ওয়াহেদ মুরাদ (চেয়ার প্রতীক) এবং ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশের জান্নাতুল ইসলাম ( হাতপাখা) এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী খোকন চৌধুরী।
তাছাড়া এবার চসিকের নির্বাচনে মেয়র প্রার্থীসহ ২’শ ২৬ জন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন। এদের মধ্যে মেয়র পদে ৭ জন, সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৫৩ জন এবং সাধারণ কাউন্সিলর পদে (পুরুষ) ১৭২ জন কাউন্সিলর প্রার্থী অংশগ্রহণ করছেন।
চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও চসিক নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে স্থগিত হওয়া চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচন আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচারণা শুরু হচ্ছে আজ থেকে। প্রার্থীরা নির্বাচনী আচরণবিধি মেনেই এসব প্রচারণা চালাবেন।
তিনি বলেন, গত মার্চ মাসে স্থগিত হওয়া নির্বাচনের প্রার্থীদের মধ্যে তিনটি ওয়ার্ড ও একটি সংরক্ষিত ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী মারা যাওয়ায় ওই চারটি ওয়ার্ডে নতুন করে তফসিলও ঘোষণা করা হয়েছে। সেই চারটি ওয়ার্ডেরও প্রতীক বরাদ্দ হবে আজ। এই প্রতীক নিয়েই প্রচারণা শুরু করতে পারবেন বলে জানান তিনি।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, আগামী ২৭ জানুয়ারির নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতিতে ৭৩৫ জন প্রিসাইডিং কর্মকর্তা, ৪ হাজার ৮৮৬ জন সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা এবং ৯ হাজার ৭৭২ জন পোলিং কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করবেন। ইভিএমের মাধ্যমেই ভোটগ্রহণ হবে।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ৪১টি ওয়ার্ডের মধ্যে ভোটার সংখ্যা ১৯ লাখ ৩৮ হাজার ৭০৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৯ লাখ ৯২ হাজার ৩৩ জন ও নারী ভোটার ৯ লাখ ৪৬ হাজার ৬৭৩ জন। ৭৩৫টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৭৩৩টি স্থায়ী ও দুটি অস্থায়ী। বুথ সংখ্যা রয়েছে ৪ হাজার ৮৮৬টি ভোট কক্ষ।
আরও জানা গেছে, ২০১০ সালের চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচনে প্রথমবারের মতো ইভিএম-এ ভোট দেন ২১ নম্বর জামালখান ওয়ার্ডের ভোটাররা। এরপর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালী-বাকলিয়া) আসনের চসিক ১৫ থেকে ২৩ এবং ৩১ থেকে ৩৫ নম্বর ওয়ার্ড পর্যন্ত মোট ১৪ ওয়ার্ডের ভোটার ইভিএম-এ ভোট দেন। এর আগে ভোটারদের ইভিএম ভীতি দূর করতে মক ভোটিং এর ব্যবস্থা করা হয়।
বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর