সাম্প্রতিককালে লোভ-লালসা এমন তীব্র আকারে দেখা দিয়েছে যে কতিপয় ব্যক্তি পাহাড়সম সম্পদ কুক্ষিগত করেও তৃপ্তিবোধ করছে না। আরও আয় করার বাসনায় ন্যায়নীতি, ইহকাল-পরকাল বিসর্জন দিয়ে পার্থিব মোহে জড়িয়ে রয়েছে। যার পরিণতিতে নিরীহ বিশ্ববাসীর নাভিশ্বাস উঠেছে। ভূমণ্ডলে দুটি বস্তু মানুষকে প্রভাবিত করছে, এর একটি নারী অপরটি সম্পদ। আজ সে দুটি বস্তু অতি সহজলভ্য হয়ে দেখা দিয়েছে। জুলেখা নামে এক রাজ মহীয়সী হজরত ইউসুফ (আ.) নবীকে পথভ্রষ্ট ও চরিত্র হননে উদ্যত হয়েছিল। এ সম্বন্ধে কোরআনুল কারিমে আল্লাহ ইরশাদ করেন, আর সে যে মহিলার ঘরে ছিল, ওই মহিলা তাকে ফুসলাতে লাগল এবং দরজাসমূহ বন্ধ করে দিল। সে মহিলা বলল, শুন তোমাকে বলছি, এদিকে আস। সে বলল, আল্লাহ রক্ষা করুন, তোমার স্বামী আমার মালিক। তিনি আমাকে সযত্নে থাকতে দিয়েছেন। নিশ্চয়ই সীমা লঙ্ঘনকারীরা সফল হয় না। (ইউসুফ-২৩)
আল্লাহপাক নিজ কুদরতে ইউসুফের পবিত্রতা রক্ষা করেন। বলা হয় যৌন কাতরতার কারণে 'ট্রয়' নগরী ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছিল।
মহান আল্লাহ ব্যভিচারীদের সম্পর্কে কঠোর সতর্কবাণী উচ্চারণ করেছেন। এ সম্পর্কে আল্লাহ কোরআনুল কারিমে ইরশাদ করেছেন, 'ব্যভিচারিণী নারী, ব্যভিচারী পুরুষ, তাদের প্রত্যেককে একশ করে বেত্রাঘাত কর। আল্লাহর বিধান কার্যকর করতে তাদের প্রতি যেন দয়ার উদ্রেক না হয়। যদি তোমরা আল্লাহর প্রতি ও পরকালের প্রতি বিশ্বাস করে থাক। মুসলমানদের একটি দল যেন তাদের শাস্তি প্রত্যক্ষ করে।' (সূরা আল নূর) বিবাহিত নারী-পুরুষের ব্যভিচারের ক্ষেত্রে আরও কঠোর সাজা ইসলামে রয়েছে। এর পরে আসে সম্পদ। রাষ্ট্রীয়ভাবে সম্পদ আত্দসাতের জন্য মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য অন্যায়ভাবে মুসলিম রাষ্ট্র আফগানিস্তান ও ইরাক দখল করে নেয়। তেল সম্পদ কুক্ষিগত করার যুদ্ধে কয়েক লাখ আদম সন্তান নিহত হয়েছেন। কারণ ইরাক তেল সম্পদে বিশ্বের তৃতীয় পরসম্পদ গ্রাসে ন্যায়-নীতি জলাঞ্জলি দিতে কোনো বিবেক-বুদ্ধি বা সততার প্রয়োজন হয় না। পার্থিব লোভ, মোহ ও আখেরাতের প্রতি উদাসীনতাই এসব দুষ্কর্মের কারণ। রাসূল (সা.) বলেছেন, দুনিয়ার মোহ সব গুনাহের মূল।
[বি-বাড়িয়ার আশুগঞ্জের মাইশার ৬ মার্চ যুবসমাজ কর্তৃক আয়োজিত বার্ষিক তাফসিরুল কোরআন ওয়াজ মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যের অংশবিশেষ।]