সব মানুষ আল্লাহর সৃষ্টি। স্রষ্টার কাছে তার সব সৃষ্টিই সমান। স্রষ্টার বিধান সবার ওপর সমভাবে প্রযোজ্য।
উবাদা ইবনুস সামিত (রা.) বর্ণিত হাদিসে বলা হয়েছে- রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : নিকটবর্তী, দূরবর্তী সবার ওপর (সমভাবে) আল্লাহর বিধান কার্যকর কর। আর আল্লাহর বিধান কার্যকর করতে কোনো নিন্দুকের নিন্দা যেন তোমাদের বিরত না রাখে। (ইবনে মাজা থেকে মিশকাতে)।
উম্মে সালমা (রা.) থেকে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার বাড়িতেই ছিলেন। তিনি তার অথবা উম্মে সালমার দাসীকে ডাকলেন। সে আসতে দেরি করলে তার চেহারা মোবারক ক্রোধে রক্তিম বর্ণ ধারণ করল। উম্মে সালমা (রা.) পর্দার আড়ালে দাঁড়িয়ে তাকে খেলায় মত্ত দেখলেন। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাতে ছিল মেসওয়াক। তিনি দাসীটিকে লক্ষ্য করে বলেন : যদি কিয়ামতের দিন প্রতিশোধ গ্রহণের আশঙ্কা না থাকত তবে আমি তোমাকে এই মেসওয়াকের সাহায্যে শাস্তি দিতাম (আদাবুল মুফরাদ, অনুচ্ছেদ : কিসাসুল আবদ)। উপরোক্ত হাদিসে আখেরাতের বিচারালয়ের উল্লেখ আছে। এ থেকে অনুমান করা যায়, আখেরাতের আদালতে যখন সামান্যতম আঘাত ও তিরস্কারের জন্যও প্রতিশোধের আশঙ্কা রয়েছে, সেখানে পার্থিব বিচারালয়ে স্বভাবতই এর জন্য জবাবদিহি হতে পারে। দ্বিতীয়ত, বাড়ির কাজের লোকদের সঙ্গে ব্যবহার কেমন হওয়া উচিত তার একটি সর্বোত্তম দৃষ্টান্ত এ হাদিসে বিদ্যমান রয়েছে।
আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন : মর্যাদাবান লোকদের ত্রুটি-বিচ্যুতি ক্ষমা করে দাও। কিন্তু সাবধান! আল্লাহতা'আলার নির্ধারিত শাস্তি (হদ্দ) ক্ষমার যোগ্য নয়। (আবু দাউদ থেকে মিশকাতে, অধ্যায়: দণ্ড বিধান) এখানে মর্যাদা বলতে মুসলিম সমাজে জ্ঞান, তাকওয়া ও দিনি খেদমতের ভিত্তিতে অর্জিত মর্যাদা বোঝানো হয়েছে। এরূপ মর্যাদার অধিকারী ব্যক্তিদের যদি কোনো পদস্খলন ঘটে, তবে তা উপেক্ষা করাই উচিত। গুরুতর হয়, তবে সে ক্ষেত্রে আল্লাহ প্রদত্ত শাস্তির বিধান তার ওপর প্রযোজ্য হবে।
লেখক : ইসলামী গবেষক।