বিশ্বব্যাপী তাগুতি ও শয়তানি শক্তির প্রভাবে মুসলমানদের সমূলে ধ্বংস করার নীলনকশা তৈরি করা হয়েছে। অপরদিকে তার থেকে মুক্তির জন্য একশ্রেণীর মুসলমান নতুন নতুন পদ্ধতি আবিষ্কার করছে কিন্তু কোনো কার্যকর ফল আসছে না। কারণ আল্লাহ তায়ালা মুসলমানদের উন্নতি সাধনের জন্য যেসব কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন তার থেকে তারা একেবারেই গাফেল।
পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হচ্ছে, 'তোমরাই বিজয় লাভ করবে যদি তোমরা প্রকৃত মুমিন হও।' অর্থাৎ যদি তোমরা আল্লাহর বিধি-বিধানের ওপর অটল থাক, তাহলে তিনি তোমাদের বিজয় ও উন্নত মর্যাদা দান করবেন। (সুরা আলে-ইমরান, আয়াত ১৩৯)।
অন্যত্র ইরশাদ হচ্ছে, 'হে ইমানদারগণ! যদি তোমরা আল্লাহর দীনের সাহায্য কর, তাহলে তিনি (আল্লাহ) তোমাদের সাহায্য করবেন এবং তোমাদের পা দৃঢ় প্রতিষ্ঠিত করবেন।' (সুরা মুহাম্মদ, আয়াত-৭)
হজরত আয়েশা সিদ্দিকা (রা.) বলেন : একবার রসুল (সা.) মাল ও দৌলত সম্পর্কে চিন্তা করতে করতে পেরেশানযুক্ত চেহারা নিয়ে ঘরে প্রবেশ করলেন এবং কারও সঙ্গে কোনো কথা না বলে অজু করে সরাসরি মসজিদে প্রবেশ করলেন এবং মিম্বরে আরোহণ করলেন। আমি বুঝতে পারলাম কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে হয়তোবা তিনি চিন্তা করছেন। তাই আমি আমার ঘর থেকে কান লাগিয়ে নবীজীর বক্তৃতা শুনতে লাগলাম। তিনি হামদ ও সানার পর বলছেন : হে লোক সকল! আল্লাহ তায়ালা তোমাদের সরল পথের কথা বলেছেন এবং ভালো কাজের আদেশ দিয়েছেন। অন্যায় ও অশ্লীল কাজ থেকে নিষেধ করেছেন।
আল্লাহ না করুন! এমন যেন না হয়, তোমরা আল্লাহর কাছে দোয়া করছ কিন্তু তিনি তোমাদের দোয়া কবুল করছেন না। তোমরা তার কাছে কিছুর আবেদন করছ কিন্তু তিনি তোমাদের আবেদন পুরা করছেন না। তোমরা তার কাছে সাহায্য প্রার্থনা করছ কিন্তু তিনি তোমাদের সাহায্য করছেন না। (ইবনে মা'জা ইবনে হিব্বান)
আজকাল নামধারী কতিপয় মুসলমান ইসলাম ও মুসলমানদের উন্নতি সাধনের জন্য যে কর্মপন্থা অবলম্বন করছে, তা সম্পূর্ণরূপে আল্লাহ ও তার রসুল (সা.)-এর তরিকার পরিপন্থী। যার ফলশ্রুতিতে উন্নতির পরিবর্তে চারিত্রিক পদস্খলন ঘটছে এবং ইসলামী তাহজিব-তামুদ্দুন বিনষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
পক্ষান্তরে যদি মুসলমানরা কোরআন-সুন্নাহভিত্তিক জীবন ও সমাজ পরিচালনা করত, তাহলে বর্তমান যুগের মুসলমানরাও সাহাবায়ে কেরাম (রা.)-এর মতো সোনালি যুগ উপহার পেত।
লেখক : মুহাদ্দিস. জামিয়া মাদানিয়া, বারিধারা।