মানসিক রোগ কত ভাবে, কত জটিল পথ ধরে আমাদের মধ্যে হানা দেয়। কত বিকৃতভাবেই না সে আমাদের উপর আছর করে। এমনই এক জটিল মানসিক রোগে আক্রান্ত যুক্তরাষ্ট্রের ২০ বছরের ছাত্রী সামান্থা ওয়েক। নিজের মুখের চামড়া খুঁটে রক্ত বের করে ফেলেন তিনি। দিনের অন্তত ছয় ঘণ্টা ধরে নিজের মুখের চামড়া খুঁটতে থাকেন সামান্থা। এ করে তার সারা মুখ ভরে গিয়েছে অজস্র ক্ষতচিহ্নে। নিজেরই তৈরি ক্ষতে বীভৎস চেহারা নিয়েছে তার মুখ। তবু নিজেকে থামতে পারেন না তিনি।
ডাক্তারি পরিভাষায় জটিল এই মানসিক রোগের নাম ডার্মাটিলোম্যানিয়া। এই অসুখে আক্রান্তরা সবকিছু ভুলে নিজেদের শরীরের বিভিন্ন অংশ নখ দিয়ে খুঁটতে থাকেন। এর ফলে বেশিরভাগ সময়ই রক্ত বেরিয়ে ক্ষতবিক্ষত হয়ে যায়। সামান্থার মধ্যে এই রোগের প্রকোপ প্রথম দেখা যায় ১১ বছর বয়সে।
কিশোরী সামান্থা তার মুখে প্রথম ব্রন দেখতে পেয়েই তা খুঁটতে শুরু করে দেয়। প্রথম দিকে এটা সবাই স্বাভাবিকভাবেই নিয়েছিল। কোনো সমস্যা বলে বুঝতে পারেনি। কিন্তু ক্রমেই তার মুখ ক্ষতবিক্ষত হয়ে যেতে থাকে। সামান্থা নিজেই খেয়াল করেন যে ঘণ্টার পর ঘণ্টা পাগলের মত এক ভাবে মুখের চামড়া খুঁটে চলেছেন তিনি। রক্ত না বেরোনো পর্যন্ত থামতে পারছেন না।
১৮ বছর বয়স থেকে এই রোগের চিকিৎসা করাচ্ছেন সামান্থা। ওষুধ, কাউন্সেলিং সব চলছে। কিন্তু এখনও বিন্দুমাত্র উন্নতি হয়নি তার। মুখে ইতিমধ্যেই যে অজস্র ক্ষতচিহ্ন তৈরি হয়েছে সেগুলো কোনোদিনও সারবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন চিকিৎসকরা। অবিলম্বে চামড়া খোঁটা বন্ধ না করলে ভবিষ্যতে আরো বীভৎস রূপ নেবে তার চেহারা।
শুধু তাই নয়, প্রতিবার নিজের মুখ চুলকানোর পর শারীরিকভাবেও অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। হতাশায় আক্রান্ত হয়ে পড়েন। তিনি জানিয়েছেন যে, বেশি সমস্যা হয় সকালে ঘুম থেকে উঠার পর আর রাতে শুতে যাওয়ার আগে। সারাদিন নানা কাজে ভুলে থাকলেও এই দুই সময় কিছুতেই নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না তিনি।