কোন যুগে বাস করছি আমরা! সম্প্রতি একটি রায়ে ১৪ বছরের এক ধর্ষিতাকে গর্ভপাত করানোর অনুমতি দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এটি যেমন প্রদীপের আলোর দিক, কিন্তু প্রদীপের নীচের অন্ধকার দিকটি হল, শীর্ষ আদালত যখন এরকম রায় দিচ্ছেন, তখন ওই নারীকে পবিত্রতার প্রমাণ দিতে হচ্ছে চড়া রোদে, খালি পেটে ৪০ কেজির পাথর মাথায় নিয়ে হেঁটে। এই নির্মম ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের গুজরাটে।
এলাকাবাসী জানায়, গ্রামেরই এক যুবকের যৌনলালসার শিকার হয়েছিলেন ওই নারী। গ্রাম থেকে তাকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। গর্ভবতী হয়ে পড়ায় গর্ভপাতের অনুমতির জন্য গুজরাট হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি। কিন্তু হাইকোর্ট তার আবেদন খারিজ করে দেন। এরপরই ওই নারী একটি সন্তানের জন্ম দেন। প্রসবের অব্যবহিত পরেই ওই সন্তানকে অনাথ আশ্রমে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। নির্যাতিতা নারীটি এরপর সংসারের সুখ পেতে স্বামীর কাছে ফিরতে চেয়েছিলেন। স্বামীও স্ত্রীকে ঘরে ফেরাতে রাজি হয়ে যান।
কিন্তু বাদ সাধে গ্রামের মোড়লরা। তারা জানিয়ে দেয়, ওই নারী পবিত্র কি না, তার জন্য অগ্নিপরীক্ষা দিতে হবে। সেই পরীক্ষায় পাশ করলে তবেই গ্রামে তার ঠাঁই হবে। কী সেই পরীক্ষা? নারীর মাথায় চাপিয়ে দেওয়া হয় ৪০ কেজি ওজনের পাথর। সেই পাথর নিয়ে চড়া রোদে মাঠের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত হেঁটে যেতে হবে। ব্যালেন্স রাখতে না পারলে বা পাথর কোনও ভাবে মাটিতে পড়ে গেলেই পরীক্ষায় ফেল।
দুপুরের চড়া রোদে খালি পেটে ওই পরীক্ষা দেন নারী। শেষ পর্যন্ত কোনক্রমে মনের অদম্য ইচ্ছের জোরেই পরীক্ষায় ঊত্তীর্ণ হন তিনি। গ্রামের মোড়লরা তাকে গ্রামে থাকার অনুমতি দিয়েছে।
বিডি-প্রতিদিন/০৯ আগস্ট, ২০১৫/মাহবুব