পিকনিক মানেই আনন্দ। আর সেই আনন্দে যদি থাকে ভিন্ন মাত্রা, বিতর্কের স্থান তাহলে তো আলোচনায় আসতে সময় লাগে না। আর সেই আলোচনায় আসতেই একদল নারী 'টপলেস' হয়ে পিকনিকের পরিকল্পনা করে। অর্থাৎ, পিকনিকে অংশগ্রহণ করতে হলে শরীরের উপরের অংশে কাপড় রাখা চলবে না। যেমন পরিকল্পনা, তেমন বাস্তবায়ন। পিকনিকে প্রায় ৫০ জন নারী উন্মুক্ত বক্ষে হাজির হন। মুহূর্তেই বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোড়ন তোলে। উন্মুক্ত স্থানে এমন আয়োজন করায় অনেকেই তাদের ছবি তুলে পোস্ট করেন। শুরু হয় তর্ক-বিতর্কের ঝড়। ঘটনাটি ঘটেছে অস্ট্রেলিয়ার ব্রিসবেনে।
কেন এমন আয়োজন? জানা গেছে, এমনটা করার কারণ ছিল পুরুষশাসিত সমাজকে চ্যালেঞ্জ করা। পুরুষরা যদি খালি গায়ে ঘুরতে পারে, নারীরা কেন পারবে না?- এমন চিন্তা থেকেই কয়েকজন নারীর মাথায় প্রথমে আসে বিষয়টি। আয়োজন করেন জো বাকলি লেনক্স (২২) আর অ্যামান্ডা হ্যাওয়ার্থ (২১) নামের দুই নারী। বিষয়টি অন্যদের সঙ্গে শেয়ার করতেই রাজি হয়ে যান অনেকেই। কেউ কেউ সমালোচনাও করেন। তবে আয়োজকরা এ ব্যাপারে ছিল অনঢ়। টপলেস এই পিকনিক আয়োজনের নাম রাখা হয় 'ফ্রি দ্য নিপল'। কিন্তু প্রায় ৫০ জন নারী টপলেস অবস্থায় পিকনিক শুরু করেছিলেন সে আনন্দ নিয়ে সেটা কিছুক্ষণ পরই ফিকে হয়ে যায়। ফেসবুক ইভেন্টের পেজে আপত্তিকর ছবি ছড়িয়ে পড়ে মুহূর্তে। মেট্রোর প্রতিবেদনে উঠে এসেছে বিচিত্র এই আয়োজনের ঘটনা।
'ফ্রি দ্য নিপল' মূলত সাম্যতার দাবিতে টপলেস হয়ে নারীদের একটি প্রতিবাদ আন্দোলন যেটা শুরু করেছিলেন সমাজকর্মী ও চলচিত্র নির্মাতা লিনা এসকো। অ্যামান্ডাদের আয়োজন ছিল ওই একই ধারণাপ্রসূত।
ডেইলি মেইল অস্ট্রেলিয়াকে অ্যামান্ডা বলেন, ''আমরা বন্ধুরা মিলে আলোচনা করছিলাম কিভাবে আমরা 'ফ্রি দ্য নিপল' নিয়ে কাজ করতে পারি। তখনই পিকনিক আয়োজনের আইডিয়াটা আসে। যেখানে বন্ধুরা আসবে এবং তাদের জামা খুলে ফেলবে। দারুণ একটা সময় কাটাবে।''
কিন্তু বাস্তবে তেমনটা হয়ে ওঠেনি। ফেসবুকে তারা এই ইভেন্টটি তৈরি করেছিলেন। আর এটা ছিল পাবলিক। ফলে এ আয়োজন এতো বেশি মনোযোগ কেড়েছে যে অনেকে অ্যামান্ডাদের ফেসবুক ইভেন্ট পেজে আপত্তিকর ছবি পোস্ট করা শুরু করে। শুধু পরুষরা নন, অনেক নারীও এই আয়োজনে অসম্ভব বিরক্ত হয়েছেন।
এক নারী লিখেছেন, এটা খুবই দুঃখজনক যে নারীরা মনোযোগ আকর্ষণ করার জন্য এ ধরনের কাজ করা প্রয়োজন বলে মনে করেন। তিনি আরও বলেন, যদি সমতা চান তাহলে হয়তো মনোযোগ আকর্ষণের এমন শিশুতোষ কাজকর্ম বন্দ করা উচিত। ওই নারী এতোটাই ক্ষেপে গেছেন যে লিখেছেন, আপনারা টপলেস হয়ে শুধু পর্নোগ্রাফির প্রচারণা ছাড়া আর কিছুই করছেন না। আরেক নারী লিখেছেন, এটা নারীজাতির জন্য লজ্জাজনক।
বিডি-প্রতিদিন/১৯ জানুয়ারি ২০১৬/ এস আহমেদ