মদের জগতে 'করোনা বিয়ার' বেশ সুপরিচিত। সেই কোম্পানির মালিক ধনকুবের আন্তোনিও ফার্নান্দেজ মারা গিয়েছেন গত আগস্ট মাসে। শোনা যাচ্ছে, সেরজালেজ দেল কোনদাদো নামে স্পেনের উত্তরপূর্বের যে প্রত্যন্ত গ্রামটিতে আন্তোনিও জন্মগ্রহণ করেছিলেন, তার মৃত্যুর পরে সেই গ্রামের প্রত্যেক বাসিন্দা ২ মিলিয়ন পাউন্ড করে পেতে চলেছেন। টাকার অঙ্কে যার পরিমাণ দাড়ায় ১৭ কোটি টাকারও বেশি।
একটি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, ৯৮ বছর বয়সে আন্তোনিও যখন মারা যান তখন তার মোট সম্পত্তির পরিমাণ দাঁড়িয়েছিল ১৬৯ মিলিয়ন পাউন্ড। আন্তোনিও নাকি তার উইলে জানিয়ে গিয়েছেন, তার জন্মস্থান যে গ্রামে, সেই গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে এই সম্পত্তি সমান ভাগে ভাগ করে দিতে হবে। বর্তমানে সেরজালেজ নামের ছোট্ট গ্রামটিতে সর্বমোট ৮০ জনের বসবাস। সেই হিসেবে প্রত্যেক গ্রামবাসী গড়ে ২ মিলিয়ন পাউন্ড করে পেতে চলেছেন।
দানবীর হিসেবে আন্তোনিও-র সুনাম ছিল। ১৯৪৯ সালে ৩২ বছর বয়সে আন্তোনিও নিজের গ্রাম ছেড়ে মেক্সিকো পাড়ি দেন নিজের ভাগ্য গড়তে। মেক্সিকোতে গিয়ে বিখ্যাত মদের কারখানা গ্রুপো মদেলো ব্রিউয়ারিতে কাজ নেন। সাধারণ কর্মী হিসেবে কাজ শুরু করলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তার পদোন্নতি হতে থাকে। ১৯৭১ থেকে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত আন্তোনিও গ্রুপো মদেলার সিইও হিসেবে কাজ করেন। করোনা সহ আরও বহু বিশ্বখ্যাত মদ এই ব্রিউয়ারিরই উৎপাদন।
নিজের জন্মভিটের কাছাকাছি লিওন নামের অঞ্চলে একটি কোম্পানিও প্রতিষ্ঠা করেছিলেন আন্তোনিও। সেখানে কাজের ব্যাপারে শারীরিক প্রতিবন্ধকতা সম্পন্ন মানুষরা বিশেষ অগ্রাধিকার পেয়ে থাকেন। আন্তোনিও নিজের জীবনে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে ধীরে ধীরে উন্নতি হতে থাকে সেরজালেজ গ্রামেরও।
গ্রামের একটি পানশালার মালিক ম্যাক্সিমিনো সানচেজ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘আমাদের গ্রাম আগে দারিদ্র্যের অন্ধকারে নিমজ্জিত থাকত। আন্তোনিও-র কৃপায় গ্রামের সর্বাঙ্গীন উন্নতি হতে থাকে। তার সুনামের প্রভাবে আমাদের গ্রামও পরিচিতি লাভ করেছে।’
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে আন্তোনিওর উইলের খবর প্রকাশিত হওয়ার পরে স্বভাবতই উচ্ছ্বসিত হয়ে পড়েন গ্রামবাসীরা। কিন্তু খবরটির সত্যতা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে অনেকেরই মনে। আন্তোনিওর পরিবারের সূত্রে জানা যাচ্ছে, গ্রামবাসীদের মধ্যে নয়, নিজের সম্পত্তি নিজের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে ভাগ করে দেওয়ার কথা আন্তোনিও তার উইলে বলে গিয়েছেন। তবে সেরজালেজের মানুষ আশায় রয়েছেন, কপালজোরে মিলেও যেতে পারে ১৭ কোটি টাকার সম্পত্তি।
বিডি-প্রতিদিন/৪ডিসেম্বর, ২০১৬/তাফসীর-৩