প্রত্নতাত্ত্বিকরা তাদের নিরবচ্ছিন্ন গবেষণার ধারা অব্যাহত রাখার জন্য খননকার্যের উপরে নির্ভরশীল একথা নতুন নয়। পাশাপাশি মিশরের নানা জায়গায় খননকার্য চলার সময় যে অনেক কবর, স্মৃতিসৌধ এং মমি আবিষ্কৃত হয় সেটাও মাঝে মধ্যে স্থান করে নেয় সংবাদের শিরোনামে। এবারও তেমনটাই হল। শুধু একটা জায়গায় দেখা গেল ব্যতিক্রম। যে মমিটি নিয়ে হইচই পড়ে গেছে সেটির ২০০০ বছরের পুরানো বলেই ধারণা প্রত্নতাত্ত্বিকদের। ওই মমির মুখের ভিতরে পাওয়া গেছে একটি সোনার জিভ। কিন্তু কেন?
এই প্রশ্নের সম্ভাব্য উত্তরে আসার আগে প্রাথমিক কিছু তথ্য জেনে নেওয়া ভালো। মিশরের বিখ্যাত তাপোসাইরিস ম্যাগনা মন্দির এলাকার আশেপাশে চলছিল এই খননকার্য। ইউনিভার্সিটি অফ সান্তো ডমিনগো এবং তার তরফে অধ্যাপক ক্যাথলিন মার্টিনেজের তত্ত্বাবধানে এই খননকার্য থেকে ১৬টি পাথরের কবর খুঁজে পাওয়া গেছে। আর তার মধ্যেই একটি মমির মুখের ভিতরে কিছু একটা চকচক করতে দেখে অবাক হয়ে যান গবেষকরা। পরে দেখা যায় যে ওটা আসলে একটা সোনার জিভ।
এই সোনার জিভটি নিয়ে আপাতত নানা জল্পনা চলছে প্রত্নমহলে। সঠিক কারণটি নিশ্চিত করে বলা যদিও সম্ভব নয়। অনেকের অনুমান, এই মৃত মানুষটি যাতে পাতালে গিয়ে মৃত্যুলোকের দেবতা আসিরিসের সঙ্গে কথা বলতে পারে, সেই জন্যই তাকে দেওয়া হয়েছিল সোনার জিভ। যখন এই মৃতদেহটিকে মমিফায়েড করা হয়েছিল, তখন এই জিভ বসিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
এই সোনার জিভ যুক্ত মমিটির কঙ্কাল এবং করোটির বেশির ভাগটাই অটুট আছে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা। পাশাপাশি তারা জানিয়েছেন যে, আবিষ্কৃত অন্য মমিগুলো এতটা ভালো দশায় না থাকলেও এদের সবগুলোর পাথরের মুখাবরণ ঠিক আছে। ফলে জীবদ্দশায় কে কেমন দেখতে ছিল, তা বোঝা যাচ্ছে স্পষ্ট। এই সোনার জিভ ছাড়াও একটি মমির মাথায় সাপ খোদাই করা সোনার মুকুট মিলেছে। এছাড়াও মিলেছে বুক-জোড়া সোনার হার, যেখানে বাজপাখি খোদাই করা রয়েছে।
প্রসঙ্গত, মিশরের এই এলাকা অনেক বছর ধরেই ঐতিহাসিক আবিষ্কারের জন্য বিখ্যাত। ক্লিওপেট্রার প্রতিকৃতি শোভিত স্বর্ণমুদ্রাও পাওয়া গেছে এখান থেকে। যা থেকে অনুমান করা হয় যে, ক্লিওপেট্রার সমকালীন ব্যক্তিদেরও এখানে কবর দেওয়া হত।
বিডি-প্রতিদিন/সিফাত আব্দুল্লাহ