মহাখালীর সাততলা বস্তিতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে বহু ঘর পুড়ে গেছে। এর সাথে সাথে পুড়ে গেছে অনেকের বেঁচে থাকার সর্বশেষ অবলম্বনটিও। এই বস্তিতে থাকা সালমা বেগমের স্বপ্নের সেলাই মেশিনটিও পুড়ে গেছে। পুড়ে যাওয়া সেলাই মেশিনের কাছে অসহায় ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে আছেন সালমা।
এমনই একটি ছবির গল্প জানার পর বসুন্ধরা শুভসংঘের প্রতিষ্ঠাতা ও বসুন্ধরা গ্রুপের উপদেষ্টা ইমদাদুল হক মিলন সংবাদিক লুৎফর রহমানকে জানান, মহাখালী সাততলা বস্তিতে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত সালমাকে বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান মহাদয়ের দেওয়া উপহার হিসেবে একটি সেলাই মেশিন সালমার হাতে তুলে দিতে চাই। পরে এ ব্যাপারে ক্ষতিগ্রস্ত সালমার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি খবরটি শুনে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
তিনি জানান, গতকাল চার মেয়েসহ স্বামীকে নিয়ে রাত্রে ছিলাম খোলা আকাশের নিচে। সকালেই এমন একটি খুশির খবর শুনবো কোনদিন স্বপ্নেও ভাবিনি। এ সময় বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান ও পরিবারের সবার জন্য দোয়া করতে থাকেন। কান্না জড়িত কণ্ঠে সালমা আরও জানান, এই সেলাই মেশিনটি ছিলো আমার সংসারের অনেক বড় একটি অবলম্বন। আমার বেঁচে থাকার স্বপ্ন। আমার ঘরে আবার সেলাই মেশিনের চাকা ঘুরবে আবার কাপড় সেলাই করতে পারবো এটি আমার কল্পনার বাইরে ছিল।
কাঠমিস্ত্রি স্বামী রাসেলের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, এই সেলাই মেশিনটি আমার স্ত্রীর অনেক বড় স্বপ্নের। আমার বড় মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌসও মাঝেমধ্যে সেলাইয়ের কাজ করতো মায়ের সঙ্গে। নবম শ্রেণীতে পড়ুয়া জান্নাতুল ফেরদৌস নতুন একটি সেলাই মেশিন ঘরে আসবে এই খবরটি শুনে দু'চোখের পানি মুছতে মুছতে বলেন, আমি পত্রিকা ও টেলিভিশনের খবরে দেখেছি বসুন্ধরা গ্রুপ শত শত গ্রামের নারীদের সেলাই মেশিন দিয়ে স্বাবলম্বী করে তুলছেন। তখন মনে হতো এরকম একটি নতুন সেলাই মেশিন যদি আমরা পেতাম তাহলে খুব ভালো হতো, মা ও আমি দুজন মিলে বেশি কাজ করতে পারতাম।
এ সময় জান্নাতুল ফেরদৌস আরও বলেন, এই ঈদে বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে এমন একটি উপহার পাবো স্বপ্নেও ভাবিনি। এটা আমার পরিবারের জন্য সত্যিই আশীর্বাদ ও আনন্দের।
বসুন্ধরা শুভসংঘের পরিচালক জাকারিয়া জামান বলেন, শীগ্রই সালমার পরিবারে একটি সেলাই মেশিন হস্তান্তর করা হবে। বসুন্ধরা শুভসংঘ সব সময়ই অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ায়।